দিনহাটা: দিনহাটা পাওয়ারহাউস মোড় দিয়ে সোমবার সকালে স্কুটারে করে মেয়েকে টিউশনে দিতে যাচ্ছিলেন লক্ষ্মীকান্ত রাজভর। কিছুটা এগোতে দেখতে পেলেন, রাস্তার ওপর ছড়িয়ে রয়েছে উচ্ছিষ্ট। কয়েকটা কুকুর সেটাই রাস্তার ওপর এনে খাচ্ছে। সকাল সকাল শহরের রাস্তায় এরকম দৃশ্য দেখতে পাবেন, ভাবেননি তিনি।
শুধু পাওয়ারহাউস মোড় নয়, শহরের গোপালনগর, ঝুড়িপাড়া, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকাগুলোর ছবিটাও অনেকটা একই। কোথাও রাস্তার ওপর, আবার কোথাও নালা ভরাট করে ফেলা হয়েছে আবর্জনা। রাত হলেই নাগরিকদের একাংশ বাড়ির ব্যালকনি কিংবা বাড়ির গেট থেকে ছুড়ে দিচ্ছে বর্জ্য। কয়েকজন নির্মল সাথীদের ভ্যানে বর্জ্য না দিয়ে ফেলছেন রাস্তায়। পথকুকুররা সেইসব টেনে রাস্তার মাঝে এনে ছড়াচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে এই দৃশ্য দিনহাটার মডেল পুরসভা গঠনের পথে অন্যতম অন্তরায়, েসটা বলাই বাহুল্য।
অথচ পুরসভা সেইসব অসচেতন নাগরিকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে কোথায়? গতবছর সেপ্টেম্বরে বোর্ড মিটিংয়ে অবশ্য শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে একঝাঁক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার মধ্যে অন্যতম জরিমানা আদায়ের সিদ্ধান্ত। কোনও নাগরিক আবর্জনা আলাদা করে না রাখলে ২০০ টাকা এবং খোলা জায়গায় আবর্জনা ফেললে ১০০ টাকা জরিমানা করা হবে এবং তা গতবছর নভেম্বর মাস থেকেই বলবৎ হওয়ার কথা। তবে পুরসভা সূত্রে খবর, এখনও এই আইন অনুযায়ী একজনও অসচেতন নাগরিককে জরিমানা করা হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, পুরসভার নমনীয় মনোভাব নিয়ে।
শহরের বাসিন্দা শিবু বর্মনের কথায়, ‘সকালে হাঁটতে বেরোলে প্রায়ই রাস্তার মাঝে পলিথিন ক্যারিব্যাগে এঁটোকাঁটা পড়ে থাকতে দেখি। পুরসভাকে আরও কড়া হতে হবে।’ পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা দে নন্দী অবশ্য শীঘ্রই পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বস্ত করলেন। তবে এখনও পর্যন্ত কেন জরিমানা আদায় করা হয়নি, তার সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
শহরের বাসিন্দা জয়গোপাল ভৌমিকের কথায়, ‘আইন করা হলে তা প্রয়োগ অবশ্যই করা উচিত। নাহলে পুর শাসন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। পাশাপাশি বাসিন্দাদেরও আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন।’
দিনহাটা পুরসভাকে সারারাজ্যে মডেল পুরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (সুডা)। সেক্ষেত্রে পুরসভা গৃহস্থালির বর্জ্য পৃথকীকরণ নিয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। নির্মল ওয়ার্ড গড়ে তোলার লক্ষ্যে চলছে মাইকে প্রচার, লিফলেট বিলি। কিন্তু তাতে লাভ হচ্ছে কতটা, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।