উত্তরবঙ্গ

শিক্ষক নেই, দীর্ঘদিন বন্ধ চ্যাংরাবান্ধার স্কুল

চ্যাংরাবান্ধা: করোনার সময় থেকে বন্ধ রয়েছে চ্যাংরাবান্ধা জুনিয়ার গার্লস স্কুল। সমস্ত স্কুল-কলেজ পুনরায় চালু করা হলেও এই স্কুলটি আজ পর্যন্ত খোলা হয়নি। বর্তমানে ওই স্কুল চত্বরে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প হয়েছে। কচিকাঁচাদের সমবেত কলরব নয়, এই স্কুল থেকে এখন ভারী বুটের শব্দ কানে আসে।

কোচবিহার জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ঘনবসতিপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র চ্যাংরাবান্ধা। কিন্তু উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এলাকার একমাত্র অবলম্বন চ্যাংরাবান্ধা হাইস্কুল। পার্শ্ববর্তী ভোটবাড়ি থেকে শুরু করে পানিশালা ও আরও বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা এই স্কুলে পঠনপাঠন করতে আসে। এই বিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর চাপ কমাতে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে আন্দোলনের ফসল হিসেবে চ্যাংরাবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনের কাছেই চ্যাংরাবান্ধা জুনিয়ার গার্লস স্কুল স্থাপিত হয়। কিন্তু শিক্ষা দপ্তরের চরম ঔদাসীন্যের কারণে গুরুত্বপূর্ণ স্কুলটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এলাকাবাসী স্কুলটি ফের চালু করার দাবি জানিয়েছেন। যদিও মেখলিগঞ্জ বিদ্যালয় পরিদর্শক পরিতোষ ওরাওঁয়ের আশ্বাস, ‘করোনার পর স্কুলটি আর খোলেনি। একজন গ্রুপ-ডি স্টাফ ছিলেন যাঁকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ডিআই সহ এডিএম, শিক্ষা দপ্তর সব জায়গাতেই জানানো হয়েছে। শিক্ষা দপ্তরের কাছে নতুন স্থায়ী শিক্ষকের আবদেন করা হয়েছে। স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ হলেই আরও দুজন অতিথি শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়টিতে ফের পঠনপাঠন শুরু করা হবে।’

এদিকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সম্পর্কে পরিতোষ ওরাওঁয়ের সংযোজন, ‘২০২২ সালে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প ওখানে বসে। তখনই তৎকালীন ব্লক প্রশাসন ও শিক্ষা দপ্তর থেকে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে বলে দেওয়া হয়েছে স্কুলে পুনরায় পঠনপাঠন শুরু হলেই তাঁদের ওই জায়গা থেকে চলে যেতে হবে। পুলিশের পক্ষ থেকেও সেই বিষয়ে সম্মতি প্রদান করা হয়েছে।’

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় স্কুলটিতে দুষ্কৃতীদের উপদ্রব বাড়ছে। এমনকি স্কুলের দরজা-জানলা পর্যন্ত চুরি হয়ে গিয়েছে। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সুনির্মল গুহের কথায়, ‘স্কুল স্থাপনের পর ছাত্রী সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছিল। পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষিকার পারস্পরিক বিবাদ ও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় শিক্ষার্থী সংখ্যা ক্রমশ কমতে শুরু করে। করোনার সময় বন্ধ হয়ে গেলে স্কুলটি আর খোলেনি। বর্তমানে একটি ভূতুড়ে বাড়ির মতো হাড়জিরজিরে অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে স্কুলটি।’

স্কুল বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে পড়ুয়াদের অন্য স্কুলে ভর্তি করতে হয়েছে। কামাত চ্যাংরাবান্ধার পবিত্র রায় জানান, তাঁর ভাইঝি গার্লস স্কুলে ক্লাস সিক্সে পড়ত। স্কুলটি বন্ধ হয়ে গেলে তাকে চ্যাংরাবান্ধা উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। চ্যাংরাবান্ধার যে জ্বলন্ত সমস্যাগুলোর আশু সমাধান প্রয়োজন তার মধ্যে অন্যতম হল এই স্কুলটিকে ফের চালু করা। চ্যাংরাবান্ধা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক শচিমোহন বর্মনের দাবি, ‘চ্যাংরাবান্ধা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা তাপসী দাস অতিথি শিক্ষিকা হিসেবে বিদ্যালয়ের হাল ধরেছিলেন। কিন্তু করোনাকালে তাঁর মৃত্যুর পর স্কুলটি আর খোলেনি। শিক্ষা দপ্তরের এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা জরুরি।’

Sucharita Chanda

Sucharita Chanda is working as Sub Editor Since 2020. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.

Recent Posts

Remal cyclone | রেমালের প্রভাব বাগডোগরাতেও, বন্ধ একাধিক বিমান চলাচল

শিলিগুড়ি: রেমালের প্রভাব আকাশ পথেও। বঙ্গোপসাগরে জন্ম নেওয়া নিম্নচাপ যখন ক্রমশই ঘুর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে বাংলাদেশে…

7 hours ago

Asansol | মালগাড়ির ধাক্কায় আসানসোলে কর্মরত রেল কর্মীর মৃত্যু, বিক্ষোভ শ্রমিক সংগঠনগুলির

আসানসোল: কর্মরত অবস্থায় মালগাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হলো পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের এক রেলকর্মীর। শনিবার সন্ধ্যা…

8 hours ago

Elephant attack | ভোট দিতে যাওয়ার পথে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু বৃদ্ধের

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ভোট দিতে যাওয়ার পথে হাতির হানায় মৃত্যু হল এক ৭১ বছরের…

8 hours ago

Toxic gas | কুয়ো খুঁড়তে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে মৃত্যু দুই যুবকের

রানিগঞ্জ ও আসানসোল: কুয়ো খুঁড়তে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে মৃত্যু হল দুই যুবকের। শনিবার সকালে ঘটনাটি…

8 hours ago

Siliguri | ক্যানসার হাসপাতাল থেকে উধাও রোগী, পরে উদ্ধার

শিলিগুড়ি: ফুলবাড়ির একটি বেসরকারি ক্যানসার হাসপাতাল(Cancer Hospital) থেকে রোগী উধাও যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য…

9 hours ago

Nagrakata | গাছ কেটে চুরির চেষ্টা! বনকর্মীদের গুলিতে মৃত্যু এক ব্যক্তির

নাগরাকাটা: জঙ্গলের ভেতর বনকর্মীদের গুলিতে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। জখম হয়েছেন আরও একজন। শনিবার সকালে…

9 hours ago

This website uses cookies.