আজাদ, মানিকচক: এবার ভূতনিতে জল ঢুকতে শুরু করল ফুলহরের। সোমবার থেকে কেশরপুর বাঁধের কাটা অংশ দিয়ে চরে জল ঢুকতে শুরু করেছে গঙ্গারও। ফলে এবার জোড়া বিপদ ভূতনিবাসীর।
গঙ্গার সঙ্গে ফুলহরের জলস্তরও বাড়তে শুরু করেছে। ভূতনির জমা জল বের করতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দক্ষিণ চণ্ডীপুরের বাঁধ কেটেছিল উত্তর চণ্ডীপুরের বাসিন্দার একাংশ। এবার বাঁধের সেই কাটা অংশ দিয়েই হুহু করে ফুলহরের জল ঢুকতে শুরু করেছে ভূতনিতে। এই আশঙ্কাতেই দক্ষিণ চণ্ডীপুরের বাঁধ কাটায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল প্রশাসন।
গঙ্গা ও ফুলহরের জলস্তর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গার জলস্তর বেড়েছে ৩১ সেন্টিমিটার। এই গতিতে দুই নদীর জল বাড়তে থাকলে গঙ্গা-ফুলহরের জলে ফের প্লাবিত হবে ভূতনি। এবার পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। পুজোর মুখে সেই আতঙ্ক তাড়া করছে ভূতনিবাসীকে।
মানিকচকের বিডিও অনুপ চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, ‘ইতিমধ্যেই কেশরপুর ও দক্ষিণ চণ্ডীপুর বাঁধের কাটা অংশ মেরামতির কাজ শুরু করেছে সেচ দপ্তর। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে কাজ। পুজোর মুখে আর বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না বলে আমরা আশাবাদী।’
গত কয়েকদিনে বৃষ্টি না থাকায় ভূতনিতে মানুষ অনেকটা স্বচ্ছন্দ বোধ করছিলেন। পরিস্থিতি পালটে যাওয়ায় এখানে আবার আতঙ্কের ছবি। জনতার মধ্যে ক্ষোভ এখনও রয়েছে। জেলার মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন সেখানে যাননি। সাংসদ ইশা খানও একবার মাত্র গিয়েছিলেন।
ফরাক্কার খবর: গত দু-তিন দিনের বৃষ্টিতে আবার জল বেড়েছে ফরাক্কার গঙ্গায়। ঝাড়খণ্ড, বিহার থেকে বেশি বৃষ্টির জল এলে গঙ্গাতীরবর্তী সামশেরগঞ্জে আবার নতুন করে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ফরাক্কাবাসী। আতঙ্কে প্রহর গুনছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার জলস্তর ছিল ২১.৪৯ মিটার, যা বিপদসীমা থেকে ৭৬ সেন্টিমিটার নীচে। যদিও ফরাক্কা ব্যারেজের মূল জলফটকের সমস্ত গেটই খোলা রয়েছে। তারপরেও গঙ্গার জলস্তর বাড়তে শুরু করছে সামশেরগঞ্জে। বুধবার জলস্তর দাঁড়িয়েছে ২০.৪০ মিটার, যা বিপদসীমার ১.৫০ মিটার নীচে। ফরাক্কা থেকে ছাড়া জল ধুলিয়ান, নিমতিতা, গিরিয়া অঞ্চলের উপর দিয়ে গিয়ে পদ্মায় মেশে। এই মুহূর্তে গঙ্গা এবং পদ্মার উত্তাল জলরাশি মিলেমিশে একাকার হয়ে চোখ রাঙাচ্ছে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের। ধুলিয়ান ও সামশেরগঞ্জের লোকালয় গঙ্গা ছুঁয়েছে ফলে ভাঙনের আশঙ্কা বাড়ছে।
জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, ‘কিছুদিন আগে ব্যারেজে গণ অবস্থান হয়েছে, সেখানে জেনারেল ম্যানেজারকে কাজ করতে বলা হয়েছে এবং ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। গঙ্গার আপ এবং ডাউনে ১২০ কিলোমিটার ভাঙন রোধের কাজ শুরু করা এবং পুনর্বাসনের জন্য জমি না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।’