সুশান্ত ঘোষ, মালবাজার: ডুয়ার্সের চা বাগান এবং অরণ্যের কোলে বেড়ে উঠেছিলেন তিন তরুণ। সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা কাটিয়ে তাঁরা আজ অগ্নিবীর (Agniveer)। তাঁরা গুরজংঝোরা চা বাগানের রাহুল লোহার, রাঙ্গামাটির করণ ওরাওঁ এবং নিউ খুনিয়ার মহাবাড়ির অনিমেষ ছেত্রী। স্কুল-কলেজের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসার ইচ্ছা ছিল প্রত্যেকেরই। কিন্তু হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসার কারণে কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না ২০ বছর বয়সি তিন তরুণেরই।
সেইসময় তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ায় মাল শহরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। গত দেড় বছর ধরে তিন তরুণ সেখানেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ফেব্রুয়ারি মাসে পরীক্ষা হয়, তারপর এপ্রিলে ফলপ্রকাশ। রাহুল এবং করণ ২১ এপ্রিল দানাপুরে জেনারেল ডিউটির ট্রেনিং নিতে যাবেন। অন্যদিকে, অনিমেষ সেদিন বেঙ্গালুরুতে গোর্খা রাইফেলসের প্রশিক্ষণে যোগ দেবেন।
অনিমেষ মহাবাড়ি থেকে মাল শহরে মাঝেমধ্যেই দৌড়ে চলে আসতেন। তাঁর এই অদ্ভুত ক্ষমতা দেখে শিক্ষক থেকে সহপাঠীরা সকলেই অবাক হয়ে যেতেন।
অনিমেষের কথায়, ‘কঠোর পরিশ্রমই জয়ের আসল মন্ত্র। ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট দেখেছি। কিন্তু পরিবারের জন্য, বাবা-মায়ের জন্য কিছু করে দেখানোর স্বপ্নকেই পুঁজি করে এই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছেছি।’ একই কথা বললেন রাহুল এবং করণও।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির কর্ণধারের কথায়, ‘তিনজনের মধ্যেই কিছু করে দেখানোর তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল। সেটা দেখেই তাঁদের পাশে থেকেছিলাম। তিনজনের এই জয় ডুয়ার্সের প্রান্তিক অঞ্চলের অনেককে অনুপ্রাণিত করবে।’ চা বাগানের স্কুলের শিক্ষক নীতেশ উপাধ্যায়ও রাহুলদের লড়াই এবং অধ্যবসায়টা কাছ থেকে দেখেছেন। তিনজনের সাফল্যে শুভেচ্ছা জানালেন তিনি।