উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: টাইটানিকের মতোই পরিণতি হল সাবমেরিন টাইটানের। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ আটলান্টিকের ১২ হাজার ফুট গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসস্তূপের ১৬০০ ফুট দূরে টাইটানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। আমেরিকার নৌসেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, জলের তলায় ডুব দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ২২ ফুটের সাবমেরিনটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। যার জেরেই মৃত্যু হয়েছে সাবমেরিনে থাকা পাঁচ অভিযাত্রীর। কিন্তু তাঁদের দেহের কোনও হদিস মেলেনি এখনও। তবে সেই ধ্বংসাবশেষের খোঁজ মিলেছে। জলের তলায় কীভাবে সাবমেরিনটি ভেঙে পড়ল তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এই বিপর্যয় নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে নানা মহলে। গত ১৮ জুন, রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ পাঁচ অভিযাত্রীকে নিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শনে গিয়েছিল টাইটান। সমুদ্রের উপরে থাকা সহযোগী জাহাজ ‘পোলার প্রিন্স’কে প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর সিগন্যাল পাঠানোর কথা ছিল টাইটানের। কিন্তু দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ টাইটানের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও টাইটান না ফেরায় আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে খবর পৌঁছয়। ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও টাইটানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না।
১৯ জুন, সোমবার আমেরিকা এবং কানাডার তরফে উদ্ধারকারী দল টাইটানের খোঁজে নামে। সমুদ্রের ৪০০০ মিটার গভীরে শব্দ নিরীক্ষণ যন্ত্র পাঠানো হয়। সেই শব্দযন্ত্রের মাধ্যমে ৩০ মিনিট অন্তর বেশ কয়েকটি জোর শব্দ শুনতে পাওয়া যায় বলে খবর। কোথা থেকে শব্দ আসছিল সেটি চিহ্নিত করে ২১ জুন দূরনিয়ন্ত্রিত একটি সমুদ্রযানকে জলের গভীরে পাঠানো হয়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর তিন দিন কেটে গিয়েছিল কিন্তু কোনও হদিস পাওয়া যায়নি টাইটানের। ২২ জুন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টে ৪৮ মিনিটে টাইটানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বলে মার্কিন সেনার তরফে জানানো হয়।
নৌসেনা এবং সমুদ্র বিশেষজ্ঞদের মতে, যে জোরালো শব্দ চিহ্নিত করা গিয়েছিল, সেই সময়েই কিছু একটা ঘটেছিল টাইটানে। অনুমান করা হচ্ছে, জলের প্রবল চাপে সাবমেরিনটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছিল। এই ধরনের সাবমেরিন কার্বন ফাইবার এবং টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি করা হয়। যদি তাতে কোনও ত্রুটি থাকে বা কোনও ভাবে চিড় ধরে তা হলে সেটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এভাবেই হয়তো ধ্বংস হয়ে যায় সাবমেরিনটি। জলের প্রবল চাপে কোনও মানুষেরই বেঁচে থাকার কথা নয়। সাবমেরিনের ভিতরে মৃত অভিযাত্রীদের দেহ পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে মৃতদেহ উদ্ধার করা কার্যত অসম্ভব বলে জানিয়েছে নৌসেনা। তবে সন্ধান মিললেও কবে সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যাবে, তা এখনও অনিশ্চিত।