উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: এক লহমায় দেখলে বাংলাকে তালিবান শাসিত আফগানিস্তান বলে ভুল হতে বাধ্য। রবিবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া মিনিট খানেকের এই ভিডিওই এখন চারিদিকে নিন্দার ঝড় তুলে দিয়েছে। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে রাস্তায় পড়ে কাতরাতে থাকা দুই তরুণ তরুণীকে গাছের ডাল দিয়ে নৃশংসভাবে পেটাচ্ছেন তৃণমূলের বাহুবলী নেতা (TMC Leader JCB) ‘জেসিবি’ ওরফে তাজমুল (Tajmul Islam)। কখনও পশ্চাদ্দেশে কখনও বা হাত তুলে বগলে মারছেন। কখনও চুলের মুঠি ধরে চলছে দেদারে লাথি। আশপাশে ভিড় করে জনতা সেই প্রহার উপভোগ করছে। সেভাবে বাঁচাতে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।
বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে নির্যাতিত যুগলের বিরুদ্ধে। আর এই অভিযোগেই ওই যুগলকে বেধড়ক মারধর করেন তৃণমূলের বাহুবলী নেতা ‘জেসিবি’। বর্তমানে তাঁকে নিয়েই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। কে এই বাহুবলী?
জানা যাচ্ছে, জেসিবি চোপড়ার (Chopra) বেশ প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। তিনি বিধায়ক হামিদুর রহমানের ঘনিষ্ঠ। সূত্রের খবর, বিধায়ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সর্বেসর্বা তিনিই। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁর সম্পর্কে মুখে কুলুপ এঁটে বসে রয়েছেন। পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর নিত্য ওঠাবসা। গতকাল জেসিবিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও অনুতাপের বিন্দুমাত্র ছাপ নেই তাঁর চেহারায়। বরং রীতিমতো দাপটের সঙ্গে হেঁটে ইসলামপুর থানায় ঢুকতে দেখা যায় তাঁকে। জেসিবির বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ থাকলেও স্থানীয় মানুষ মুখ খুলতে রাজি নন। জানা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি লুকিয়ে মোবাইলে ভিডিওটি করেছিলেন। সেই ব্যক্তি এখন ভয়ে গ্রাম ছাড়া। চোপড়ার অনেকেই ভিডিওটি নিজের সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন। অভিযোগ, চাপের মুখে প্রত্যেকেই তাঁরা সেই পোস্ট ডিলিট করেছেন। যদিও এই বাহুবলী নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগকে তেমন গুরুত্বই দিতে রাজি নন চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান। বরং তিনি অনেক বেশি জোর দিচ্ছেন ওই যুগলকে দুশ্চরিত্র প্রমাণে। ফলে পুলিশ জেসিবিকে গ্রেপ্তার করলেও শাস্তি আদৌ হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান চোপড়ার মানুষই।