শিলিগুড়ি: অবশেষে রোগী কল্যাণ সমিতিতে (Rogi Kalyan Samities) পুনরায় তৃণমূলের (Tmc) জনপ্রতিনিধি ও নেতানেত্রীদের জায়গা দিল রাজ্য সরকার। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে আরজি কর মেডিকেলের রোগী কল্যাণ সমিতি থেকে বিধায়ক সুদীপ্ত রায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান করা হয়েছে ঠিকই, তবে শাসক দলের জনপ্রতিনিধি বা নেতানেত্রীরাই যে এখন থেকে বকলমে রোগী কল্যাণ সমিতি পরিচালনা করবেন তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কথা প্রসঙ্গে, একটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ বলেই ফেললেন, ‘আমি তো নাম কে ওয়াস্তে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। শাসক দলের নেতানেত্রীদের বাদ দিয়ে আমি বৈঠক পরিচালনা করবো এটা ভাবাও কঠিন।’
আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (R G kar) তরুণী চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি ঘোষণা করে মেডিকেল কলেজগুলিতে আন্দোলন শুরু করেন জুনিয়ার ডাক্তাররা। এর মাঝেই একদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরজি করের আন্দোলন মঞ্চে গিয়ে রাজ্যের সব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। সেখানেই মমতা জানিয়েছিলেন, কলেজ অধ্যক্ষদের চেয়ারম্যান করে নতুন করে রোগী কল্যাণ সমিতি তৈরি করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর (Chief Minister) এই ঘোষণার পরেই গত ১ অক্টোবর স্বাস্থ্য দপ্তর একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল। যেখানে কলেজ অধ্যক্ষকে চেয়ারম্যান, হাসপাতাল সুপারকে (এমএসভিপি) সদস্য সচিব করে আট সদস্যের রোগী কল্যাণ সমিতির কথা বলা হয়। কমিটিতে বাকি ছয় সদস্যের মধ্যে অধ্যক্ষ মনোনীত দু’জন বিভাগীয় প্রধান, সিনিয়ার রেসিডেন্টস ডাক্তারদের প্রতিনিধি, জুনিয়ার রেসিডেন্টস ডাক্তারদের প্রতিনিধি, একজন নার্স এবং একজন জনপ্রতিনিধিকে কমিটিতে রাখা হয়েছিল। তবে, কমিটিতে পুলিশ, পূর্ত দপ্তর, অ্যাডিশনাল সুপার, ডেপুটি সুপার, অ্যাকাউন্টেন্টকে না রাখায় প্রশ্ন উঠেছিল। পাশাপাশি একজন জনপ্রতিনিধি বলা হলেও মেডিকেল কিভাবে সেই জনপ্রতিনিধিকে বাছাই করবে সেটা নিয়েও কোনো স্পষ্ট বক্তব্য ওই বিজ্ঞপ্তিতে ছিল না। যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। যার জেরে রাজ্যের কোনো মেডিকেলেই রোগী কল্যাণ সমিতি তৈরি হয়নি। আরজি কর কাণ্ডের পর অর্থাৎ অগাস্ট মাস থেকে কোনো মেডিকেলে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকও হয়নি। টানা চার মাস কোনো বৈঠক না হওয়ায় রোগী পরিষেবার উন্নয়ন নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি মেডিকেল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার স্বাস্থ্য দপ্তর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ২৪টি রাজ্যের মেডিকেলে রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য হিসাবে একজন করে জনপ্রতিনিধির নাম জানিয়ে দিয়েছে। সেই তালিকায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, জলপাইগুড়ি সরকারি মেডিকেলে তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ, কোচবিহার এমজেএন মেডিকেলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, রায়গঞ্জ সরকারি মেডিকেলে বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, মালদা মেডিকেলে ইংলিশপাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরিকে সদস্য করা হয়েছে। কলকাতার আরজি কর মেডিকেলের রোগী কল্যাণ সমিতি থেকে বিধায়ক সুদীপ্ত রায়কে আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার সেই রোগী কল্যাণ সমিতিতে অতীন ঘোষকে সদস্য করা হয়েছে। অরূপ বিশ্বাসকে এসএসকেএম, সুপ্তী পাণ্ডেকে এনআরএস এবং সাগর দত্ত মেডিকেলের রোগী কল্যাণ সমিতিতে মদন মিত্রকে সদস্য করা হয়েছে।