গৌরহরি দাস, কোচবিহার: পাহাড়ের পাশাপাশি গত ২৪ ঘণ্টায় কোচবিহারে (Coochbehar) ভারী বৃষ্টিপাত (Heavy Rain) হওয়ায় জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে কোচবিহারের নদীগুলিতে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি নদী একেবারে বিপদসীমা ছুঁইছুঁই অবস্থায় রয়েছে। অন্যদিকে, বিপদসীমার ওপর দিয়ে জল বয়ে যাওয়ায় গত তিন-চারদিন ধরে তিস্তায় মেখলিগঞ্জে লাল এবং দোমোহনিতে হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে।
সোমবার দিনের বেলায় বৃষ্টির হার কিছুটা কমলেও সোমবার বিকাল থেকে প্রায় সারারাত কোচবিহারে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ফলে কোচবিহার শহর লাগোয়া ফাঁসিরঘাট এবং ঘুঘুমারি চর এলাকায় নতুন করে বেশ কয়েকটি বাড়িতে তোর্ষার জল (Torsa River Overflow) ঢুকতে শুরু করেছে। জেলা সেচ দপ্তর গোটা বিষয়টির উপর নজর রেখেছে। যদিও ফাঁসিরঘাটের বাসিন্দা নুরুল হোসেনদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে।
কোচবিহার জেলা সেচ দপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বদিরুদ্দিন শেখ বলেন, ‘পাহাড়ের পাশাপাশি কোচবিহারেও ভারী বৃষ্টি হওয়ায় জেলায় অধিকাংশ নদীতে জল বাড়ছে। ইতিমধ্যে জেলার কোচবিহার, তুফানগঞ্জ এবং মাথাভাঙ্গায় তিনটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি।’
জুন মাসের পর চলতি মাসের শুরুতেও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে কোচবিহারে। জেলা সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে মোট ৫৫৫.৬০ মিলিমিটার। এর মধ্যে কোচবিহার সদর মহকুমায় ১২৬.৬০ মিমি, তুফানগঞ্জ মহকুমায় ৬৮.২০ মিমি, মাথাভাঙ্গা মহকুমায় ১৬২.৬০ মিমি, দিনহাটায় ১০৫.২০ মিমি ও মেখলিগঞ্জ মহকুমায় ৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। চলতি বছরে কোচবিহারে এখনও পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৬৮৬৭.৬০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। লাগাতার বৃষ্টিপাতের জেরে জেলার প্রায় সমস্ত নদীর জল অনেকটাই বেড়েছে। সেচ দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, জেলায় রায়ডাক-২, রায়ডাক-১, মাথাভাঙ্গার মানসাই, তোর্ষার ঘুঘুমারি, কেশব আশ্রম সব নদীরই জলস্তর ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এছাড়া, আলিপুরদুয়ারের তোর্ষা, কালজানি নদীর জলও বেড়ে চলেছে। এই নদীগুলির প্রায় প্রতিটিরই জল বিপদসীমা ছোঁয়ার থেকে হাফ অথবা এক মিলিমিটার নীচে রয়েছে। তোর্ষার জল বেড়ে যাওয়ায় কোচবিহার শহর লাগোয়া ঘুঘুমারি নদীর চর সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের ঘরে জল ঢুকতে শুরু করেছে। চিন্তা বাড়ছে বাসিন্দাদের।
ফাঁসিরঘাট চর এলাকার বাসিন্দা রেজিনা বিবি বলেন, ‘নদীর জল ক্রমশ বাড়ছে। ইতিমধ্যে একাধিক বাড়িতে জল ঢুকে পড়েছে। মঙ্গলবার রাতে কী হয়, এই নিয়ে আমরা যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছি।’