সানি সরকার, শিলিগুড়ি: লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়েও একশো কোটি ছোঁয়া হল না। পাহাড়-সমতলের মধ্যে টয়ট্রেন (Toy Train) চললে অনায়াসেই এই লক্ষ্যপূরণ হয়ে যেত, আক্ষেপ রেলকর্তাদের। বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে প্রতি বছরই স্পেশাল ট্রেন চালিয়ে বাড়তি অর্থ রোজগার করে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু ৭৪টি স্পেশাল ট্রেন চালিয়ে ৯৪.১৩ কোটি টাকা বাড়তি রোজগার, ভাবতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট জোনের রেলকর্তারা। রেলের প্রতি আস্থা থাকায় দিনদিন যে যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে, তা এই রোজগারের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট, বক্তব্য তাঁদের। বাড়তি রোজগারের টাকা এই অঞ্চলের পরিকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করা হবে বলে জানাচ্ছেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জলকিশোর শর্মা।
উৎসবের সময় গড়াচ্ছে না পাহাড়-সমতলের মধ্যে টয়ট্রেনের চাকা। টয়ট্রেনের চলাচল সীমাবদ্ধ রয়েছে পাহাড়ের পাকদণ্ডির মধ্যে। প্রতি বছরই ভিড়ে ঠাসা থাকে সমতল-পাহাড়ের মধ্যে চলা টয়ট্রনে। যাত্রী ভিড় সামাল দিতে বাড়তি স্পেশাল ট্রেন চালানো হয়। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় রেললাইন বসে যাওয়ায় বাড়তি ট্রেন তো দূরের কথা, শিডিউলে থাকা টয়ট্রেনই চালানো সম্ভব হয়নি। বাড়তি ট্রেন চালানো সম্ভব হলে বাড়তি রোজগার একশো কোটি টাকা ছুঁয়ে যেত বলে মনে করছেন রেলকর্তাদের একটা বড় অংশ। এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘মহালয়া থেকে কালীপুজো, টানা একমাস স্পেশাল ট্রেন চললে আয়টা আরও হত। সেক্ষেত্রে একশো কোটি টাকা ছুঁয়ে ফেলা যেত না, কে বলতে পারে।’
এদিকে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নতুন করে নিউ জলপাইগুড়ি জংশন (এনজেপি) (NJP) এবং দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) মধ্যে খেলনা গাড়ির চলাচল শুরু করতে চাইছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (ডিএইচআর)। কাটিহারের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার সুরেন্দ্র কুমারের উপস্থিতিতে এনজেপিতে শুক্রবার একটি বৈঠক রয়েছে। এই বৈঠকটিতে ডিএইচআরের পরিকাঠামো এবং টয়ট্রেন চলাচলের বিষয়টি আলোচনা হতে পারে বলে রেল সূত্রে খবর।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের হিসেব বলছে, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৭৪টি স্পেশালের ৬৭৩টি ট্রিপে বাড়তি আয় হয়েছে ৯৪.১৩ কোটি টাকা। ৮,৮৩৭টি বার্থে পরিষেবা পেয়েছেন প্রায় ৯.৮ লক্ষ যাত্রী। স্পেশাল ট্রেনের চাকা এখনও গড়াচ্ছে। অক্টোবর মাস শেষ হওয়ার আগে স্পেশালের সংখ্যা কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। ফলে রোজগার আরও বাড়বে বলে আশাবাদী উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তারা।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জলকিশোর শর্মা বলছেন, ‘নির্ধারিত অপারেশনাল বেঞ্চমার্কের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হয়েছে যাত্রীদের চাহিদা এবং সহযোগিতায়। বাড়তি যে রোজগার হয়েছে তা পরিকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।’