প্রাণ বাজি রেখে উদ্ধারে নেমেছিলেন যাঁরা। ছবি: শান্তনু ভট্টাচার্য
সৌরভ রায়, ফাঁসিদেওয়া: সকাল থেকে আকাশের অবস্থা ভালো ছিল না। বৃষ্টিও হচ্ছিল। তার মধ্যেই গ্রামের মানুষ কেউ জমিতে আবার কেউ নিজের কাজে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। তখন সকাল প্রায় পৌনে ৯টা। হঠাৎ বিকট শব্দ পেয়েই জমির ধারে ছুটে গিয়েছিলেন রীতা সিংহ। তখন বাড়ির অনেকেই ঘুম থেকে ওঠেননি। গিয়ে দেখলেন দুর্ঘটনায় একটি ট্রেনের বগি আরেকটির উপরে উঠে গিয়েছে।
বিকেল পর্যন্ত আর বাড়িই ফিরতে পারেননি রীতা। তঁার কথায়, ‘এমন দুর্ঘটনা (Train accident) আগে কখনও চোখে দেখিনি। এত মানুষ পরিজনদের হারিয়েছেন দেখে কোনও কিছুই ভালো লাগছে না।’ ফাঁসিদেওয়া (Phansidewa) রুইধাসা এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গোটা মানুষ ছুটি গিয়েছিলেন সেখানে। যা দেখেছেন তাতে কী করবেন তা ঠাহর করা মুশকিল হয়ে পড়েছিল। যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে তার থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে বাড়ি রুনা খাতুনের।
তখন সবে হাঁড়িতে ভাত চাপিয়েছিলেন রুনা। সব ছেড়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিরেছেন দুপুরের পর। কথা বলতে গিয়ে রুনা বলেন, ‘বাড়ির পিছনের জানলা দিয়ে চা বাগানের পাশ দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলাম একটি কামরার উপর আরেকটি কামরা উঠে রয়েছে। এই অবস্থায় আর রান্না করার কথা মনে থাকে। চলে গেলাম সেখানে।’
ট্রেনের ভিতর থেকে ভেসে আসছিল কান্নার শব্দ। গ্রামবাসী আর বসে থাকতে পারেননি। সকলেই নেমে পড়েন উদ্ধারের কাজে। এদিন ঘটনাস্থলের আশপাশের কয়েকটি গ্রামের চিত্র। চাষের কাজ ছেড়ে দুর্ঘটনায় জখমদের উদ্ধার করতে হাজির হয়েছিলেন পুরুষরা। দিনভর ফাঁসিদেওয়ার সিংহীভাসা, রুইধাসা, নির্মলজোত, মুিন্সবাড়ি এবং টামবাড়ি গ্রামের মানুষদের গোটা দিন কেটেছে রেললাইনের ধারেই।
কিছু মানুষ দূরে দাঁড়িয়ে মোবাইলে ছবি কিংবা ভিডিও করেছেন ঠিকই। সেখানে হাজির হয়েছিলেন রুইধাসার মহম্মদ রহমানের মতো মানুষ। নমাজ শেষ করেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি দেখেন রেললাইনের পাশে রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। এর মধ্যেই এক মহিলার কাতর আর্তি। ওই মহিলাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠান তিনি।
এদিন এই গ্রামের অনেক মানুষই ইদের পরব পালন করতে পারেননি। স্থানীয় ইদগাহে সকাল ৮টা নাগাদ নমাজের পরই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সামিরুল, রহমানরা সবকিছু ছেড়ে গিয়েছিলেন উদ্ধারের কাজে। তাঁদের কথায়, আগে মানুষের জীবন তারপর সবকিছু। মহম্মদ আলম, মইজমা বেগমদের কথায়, গোটা গ্রামেই কেউ ইদের পরব পালন করতে পারেননি। আমরা পরে আনন্দ করতে পারব। কিন্তু, যাঁদের পরিবারের সদস্যরা মারা গেলেন তাঁদের কথা ভেবে আনন্দের উৎসাহ হারিয়েছে সকলেই।
টাওয়াজোতের মুকুন্দ সিংহ বলেন, ‘এমন ভয়ানক দৃশ্য দেখার পর আর মুখে কিছু দেওয়া যায় না। ঘরে হাঁড়ি চড়েনি এদিন।’
দুর্গাপুরঃ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মেয়েদের ভুল বুঝিয়ে নিয়ে আসা হত। অভিযোগ তাদেরকে বিয়ে দেওয়া হত।…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: মুথ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরই রাজ্য জুড়ে হকারদের বিরুদ্ধে রে রে করে নেমে…
আসানসোল: কয়লা পাচার মামলায় ফের কোমর বেঁধে নেমেছে সিবিআই। বলতে গেলে লোকসভা নির্বাচন মিটতেই সক্রিয়…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: পিএইচডি (PhD) করতে চান জেলবন্দি এক শীর্ষ মাওবাদী নেতা (Maoist leader)…
শিলিগুড়ি: ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকার দাপুটে তৃণমূল (Tmc) নেতা তথা দলের ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি ব্লক সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিককে…
নকশালবাড়িঃ মঙ্গলবার রাতে নকশালবাড়ি সাতভাইয়া এলাকায় পুলিসের অভিযানে উদ্ধার হল প্রচুর সুপারি। সুপারি পাচারের অভিযোগে…
This website uses cookies.