দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ ব্লকের গৌরি অঞ্চলের বিশাহার বুথের তৃণমূল প্রার্থী মাসুদ আলমকে পুলিশ গ্রেপ্তার করায় দলবল নিয়ে সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, বাম ও কংগ্রেসের লোকজন এলাকায় ঝামেলা করেছে, কিন্তু পুলিশ তৃণমূল প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে। তৃণমূল নেতা সঞ্জয় শীল, সফিকুল হকের নেতৃত্বে কয়েকশো তৃণমূল কর্মী থানা ঘেরাও করে আইসির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।
গৌরি অঞ্চলে কয়েকদিন ধরে কংগ্রেস ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। বিশাহারের জোট প্রার্থীর আত্মীয়ের বাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায়ী উপপ্রধান তৈয়ব আলির বাড়িতেও হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। এরপর সোমবার রাতে তৃণমূল প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যা নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। রাত দুটো পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা।
তৃণমূল নেতা সফিকুল হক বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট শেষ হয়েছে। কিন্তু সিপিএম ও কংগ্রেসের ছেলেরা আমাদের উপর অত্যাচার করছে। পুলিশ ওদের গ্রেপ্তার না করে আমাদের প্রার্থীকে ও ছেলেদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসেছে। পুলিশ আমাদের কথা শুনছে না। আইসি কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপির কথা শুনছেন। তাই আমাদের আন্দোলন।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌরি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায়ী উপপ্রধান তৈয়ব আলির বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধেই। তাঁদের সন্দেহ, উপপ্রধান তৈয়ব আলি এবার প্রার্থী না হওয়ায় কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে প্রচার চালিয়েছেন। সেই প্রভাব ভোটে গিয়ে পড়েছে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা কোনও হামলা চালাননি, কংগ্রেস হামলা চালিয়েছে।
বিদায়ী উপপ্রধান তৈয়ব আলির বক্তব্য, ‘আমি তৃণমূল কংগ্রেস করি। এবার অসুস্থ থাকায় প্রার্থী হতে চাইনি এবং তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতে পারিনি। তৃণমূল কর্মীদের ধারণা, তাঁদের প্রার্থী আমার জন্য এবার হারবে। সেকারণে আমার বাড়িতে ও আমার ভাইয়ের বাড়িতে হামলা চালায় তাঁরা। পুলিশ এলেও আমার ছেলেকেই তুলে নিয়ে গিয়েছে। এভাবে চলতে পারে না। আমি অসুস্থ, তাই কোথাও বের হতে পারছি না।’
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা রেজাউল হক বলেন, ‘উপপ্রধান এবার কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে প্রচার করেছেন। তার প্রমাণ আছে। আমরা কেউ ভাঙচুর বা হামলা করিনি। কংগ্রেস হামলা চালিয়েছে।’
যদিও এবিষয়ে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘বিশাহারে আমাদের প্রার্থী মোতিউর রহমানের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে তৃণমূল এবং তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে রেখেছে। কংগ্রেস কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর করেছে। ওঁরা যাতে গণনা কেন্দ্রে না আসতে পারেন সেজন্য এই হামলা। হেরে যাবে জেনেই আক্রমণ করেছে। পুলিশ দুই পক্ষের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।’