শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে শাসকদলের নেতার অবৈধ নির্মাণ ভাঙা নিয়ে প্রকাশ্যে এল গোষ্ঠীকোন্দল। তৃণমূলের ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র দেবনাথ পাপিয়া-ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাঁর ওপর কোপ পড়ছে বলে দাবি শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের একাংশের। স্থানীয় কাউন্সিলারের অঙ্গুলিহেলনে এই কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের। বৃহস্পতিবার সৌমিত্রর পাশে দাঁড়াতে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন পুরনিগমের মেয়র পারিষদ দিলীপ বর্মন। দিলীপের বক্তব্য, ‘নিজের দলের লোকেদেরই আমরা সুরক্ষা দিতে পারছি না, সাধারণ মানুষকে কেমন করে দেব।’ অন্যদিকে, স্থানীয় কাউন্সিলার অমরআনন্দ দাসের বক্তব্য, ‘এখানে আমার কোনও হাত নেই। যা হয়েছে আদালতের নির্দেশে হয়েছে। দিলীপ কী মন্তব্য করেছেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।’
৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাড়ি ভাঙা নিয়ে বিতর্ক শুরু থেকে। বাড়ির মালিক তথা তৃণমূল নেতা সৌমিত্র দেবনাথের বক্তব্য ছিল, স্থানীয় কাউন্সিলার অমরআনন্দ দাসের অঙ্গুলিহেলনে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অমর তাঁর কাছে টাকা চেয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন। সৌমিত্রর অভিযোগ ছিল, যিনি পুরনিগমে অভিযোগ করেছেন তিনি অমরের লোক। কাউন্সিলারের অঙ্গুলিহেলনে ওই ব্যক্তি হাইকোর্টে গিয়েছিলেন বলে দাবি তাঁর।
নির্মাণ ভাঙা নিয়ে সৌমিত্রর পাশে দাঁড়িয়েছেন ওয়ার্ডের শাসকদলের নেতাদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, এলাকায় কাউন্সিলারের অনৈতিক কাজকে সমর্থন না করাতেই এই ঘটনা ঘটেছে। বেছে বেছে ওয়ার্ড সভাপতি, ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদকের নির্মাণে চোখ পড়েছে পুরনিগমের। অভিযোগ উঠেছে, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের ৯০ শতাংশ বাসিন্দারই জমির পাট্টা নেই। কাউন্সিলার-ঘনিষ্ঠ এমন অনেকে রয়েছেন যাঁদের পাট্টা নেই, অথচ নির্মাণকাজ করছেন। সেদিকে পুরনিগম কোনও নজর দিচ্ছে না। এদিন তৃণমূল কর্মীরা এলাকায় প্রকাশ্যেই এই ধরনের মন্তব্য করছিলেন।
তবে জেলা তৃণমূল সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষের বক্তব্য, ‘আইন অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। এখানে কিছু বলার নেই।’ ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকারও বলছেন, ‘আদালতের নির্দেশ মতো কাজ হয়েছে।’ তাঁরা এমন বললেও বিষয়টি নিয়ে শাসকদলের অন্দরে শুরু হয়েছে অস্বস্তি। এরকম চলতে থাকলে ওয়ার্ডের পাশাপাশি পুর এলাকায় তৃণমূল আরও ব্যাকফুটে যাবে বলে মনে করছেন দলের বর্ষীয়ান নেতা-কর্মীরা।