প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লি: কংগ্রেসের মতোই নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কট করতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূলও। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে মিলেছে এমনই ইঙ্গিত। সরকারিভাবে বয়কটের সিদ্ধান্ত আর দু একদিনের মধ্যেই প্রকাশ্যে নিয়ে আসতে পারে ঘাসফুল শিবির।
নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন নিয়ে এই মুহূর্তে উত্তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। আগামী ২৮ মে নয়াদিল্লিতে নবনির্মিত সংসদ ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু তাতেই বাধ সেধেছে বিরোধীরা। কংগ্রেসের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নয়, নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করুন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এই দাবি প্রথম জানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। তারপর একে একে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, জয়রাম রমেশ এই দাবি করেন। কংগ্রেসের সঙ্গে এই সুর সুর মিলিয়েছে বাকি বিরোধীরাও। এবার সেই তালিকায় শামিল হল তৃণমূল কংগ্রেসও।
সোমবার তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ ও রাজ্যসভা দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, ‘সংসদ শুধুমাত্র নতুন বিলাসবহুল নির্মাণ নয়, এটি প্রাচীন ঐতিহ্য, পরম্পরা, মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধন। এটি ভারতীয় গণতান্ত্রিক পরম্পরার ভিত্তি। প্রধানমন্ত্রী তা হৃদয়ঙ্গম করতে ব্যর্থ।’
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির নাম উল্লেখ না করেই প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ ড. সৌগত রায় বলেন, ‘অন্য একটি দলের এক সাংসদকে দেখলাম এবিষয়ে উল্লেখ করেছেন। আমাদের বক্তব্যও একই। প্রধানমন্ত্রী নন, বরং দেশের রাষ্ট্রপতির উচিত নতুন সংসদ উদ্বোধন করা।’
সৌগত রায় এও বলেন, ‘লোকসভা এবং রাজ্যসভা নিয়ে গঠিত সংসদ। প্রধানমন্ত্রী শুধুই সংখ্যাগরিষ্ঠ শাসকদলের নেতা। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সংসদের সাংবিধানিক অভিভাবক। প্রধানমন্ত্রী শুধুই ভোটব্যাংকের মুনাফা কামাতে উদ্বোধন করছেন, বিপুল পরিমাণ অর্থের নয়ছয়ে নির্মিত এই সংসদ ভবন যার কোনও প্রয়োজন ছিল না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল সাংসদের দাবি, কংগ্রেসের মতো দলও (তৃণমূল) বয়কট করতে পারে সংসদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এই মুহূর্তে এ নিয়ে সর্বোচ্চ স্তরে আলোচনা চলছে, দু-একদিনের মধ্যে নেওয়া হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
বিরোধীদের যুক্তির পাল্টা যুক্তি দিয়েছে গেরুয়া শিবিরও। তাদের তরফে বলা হয়েছে, কংগ্রেস নেতাদের দাবি অযৌক্তিক। সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রধানমন্ত্রীই প্রধান। গেরুয়া শিবিরের যুক্তি, ১৯৮৭ সালে সংসদ গ্রন্থাগারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন রাজীব গান্ধি, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি নন।