বর্ধমান: কলেজ ক্যাম্পাসে বসে গাঁজা সেবনের দায়ে শেষ পর্যন্ত পদ থেকে সাসপেন্ড করা হল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতাকে। ওই ছাত্র নেতার নাম হিতেশ শেঠ। তিনি পূর্ব বর্ধমানের হাটগোবিন্দপুর ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে টিএমসিপি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক। যেখানে যাদবপুরের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল মদ-গাঁজার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে সেখানে তাদেরই ছাত্রনেতার গাঁজা সেবনের ভিডিও প্রকাশ্যে আসতে অস্বস্তিতে পড়তে হয় সংগঠনকে। তাই প্রাথমিকভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার রাতে বিবৃতি দিয়ে হিতেশ শেঠকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন। হিতেশ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে না পারা পর্যন্ত এই সাসপেনশন জারি থাকবে বলেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি জানিয়ে দিয়েছেন।
হাটগোবিন্দপুর কলেজ ক্যাম্পাসে বসে হিতেশ শেঠের গাঁজা সেবনের ভিডিও বুধবার রাত থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। হিতেশ কলেজ ক্যাম্পাসে বসে গাঁজা সেবন করছেন বলে ভিডিও-তে দাবি করা হয়। যদিও ভিডিওর সত্যতা উত্তরবঙ্গ সংবাদ যাচাই করেনি। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায় চৌধুরী দাবি করেন, ওই ছেলেটিই টিএমসিপি হাটগোবিন্দপুর কলেজ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক। সে ওই কলেজেরই দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আর এরপর হিতেশ শেঠের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার দাবি, ‘এটা বিরোধীদের চক্রান্ত। তাঁর বদনাম করার জন্য এসএফআই এসব এডিট করা ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে।’ হিতেশের পাশে দাঁড়িয়ে একই দাবি করেন জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি স্বরাজ ঘোষও। তিনিও বলেন, ‘এসব বিরোধীরা করছে। এসব সত্য নয়। ওই ছবি ফেক ছবি।’ আর কলেজের প্রিন্সিপাল অমল কুমার ঘোষ তো আরও একধাপ এগিয়ে জানান, ‘কলেজের বদনাম করার জন্য এই ছবি ছাড়া হয়েছে। আমি সারাদিনে দু’বার করে কলেজ ক্যাম্পাসে ঘুরে দেখি। এটা আমাদের কলেজের ছবি নয়। কিছু বিক্ষুব্ধ প্রাক্তন ছাত্র এই সব করেছে বলেই মনে হচ্ছে।’ কিন্তু ঘটনা ধাপাচাপা দেওয়ায় এত কৌশল এঁটেও লাভের লাভ কিছু হয়নি। শেষ পর্যন্ত রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতৃত্বের শাস্তির কোপেই পড়তে হল হিতেশ শেঠ কে। এসএফআই নেতৃত্ব দাবি করেছে,এই ঘটনা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আসল রূপ প্রকাশ্যে এনে দিয়েছে।