কোচবিহার ও পুণ্ডিবাড়ি: তৃণমূল যুব নেতার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে। সোমবার গভীর রাতে কোচবিহার শহর সংলগ্ন খাগড়াবাড়িতে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে কোচবিহার-২ ব্লকের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহ সভাপতি বিপ্র ঘোষকে (৩০) রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে পুণ্ডিবাড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই তরুণকে উদ্ধার করে এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। যেখান থেকে ওই তরুণকে উদ্ধার করা হয়েছে সেখান থেকে একটি মোটরবাইক উদ্ধার হয়। কিন্তু ওই তরুণের মানিব্যাগ ও তাঁর কাছে থাকা আধার কার্ড পাওয়া যায়নি বলে পরিবারের অভিযোগ। আর এনিয়েই এ বিষয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে।
মৃতের বাবা বাদল ঘোষের বক্তব্য, ‘সোমবার রাত ১টার দিকে ফোনে ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছিল। মারুগঞ্জে আছে বলে ও জানিয়েছিল। আধ ঘণ্টার মধ্যে বাড়ি ফিরবে বলেও জানায়। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে বাড়ি না ফেরায় আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি। আড়াইটার দিকে দুর্ঘটনার খবর পাই। কীভাবে কী হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারছি না। ওর কাছ থেকে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলেও মানিব্যাগ বা আধার কার্ডটি পাওয়া যায়নি। আর এ কারণেই গোটা বিষয়টি নিয়ে আমাদের খুব সন্দেহ হচ্ছে। আমরা সবকিছু পুলিশকে জানাব।’ পুণ্ডিবাড়ি থানার এক আধিকারিকের দাবি, রাস্তার ব্যারিয়ারে ধাক্কা লাগায় ওই তরুণ পড়ে যান। কী কারণে তিনি পড়ে যান তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঘটনার বিষয়ে অবশ্য পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।
কোচবিহার-২ ব্লকের ঢাংঢিংগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মরানদীরকুঠি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত। কয়েকজন অংশীদার মিলে তাঁরা চকচকা এলাকায় টাইলস বিক্রির একটি দোকান খুলেছিলেন। ওই তরুণ সেখান থেকে সাধারণত রাত ১০টা-সাড়ে ১০টায় বাড়ি ফিরতেন। অধিকাংশ দিনই তাঁর কাছে ব্যবসার টাকা থাকত। দুর্ঘটনার সময়ও তাঁর কাছে টাকা ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর ওই তরুণের কাছ থেকে মানিব্যাগ ও আধার কার্ড উদ্ধার না হওয়ার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রহস্য বাড়ছে।
মৃত্যুর ঘটনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মঙ্গলবার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর ওই তরুণের মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এদিনই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তাঁর মৃত্যুতে তৃণমূলের তরফেও শোকপ্রকাশ করা হয়েছে। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কোচবিহার-২ ব্লক সভাপতি শুভাশিস রায় বললেন, ‘অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা শোকাহত পরিবারের পাশে রয়েছি।’