উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: আয়ুর্বেদ চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রধান উদ্দেশ্য, সঠিক জীবনশৈলী, খাদ্যাভ্যাস ও ভেষজের মাধ্যমে সুস্থ ব্যক্তির স্বাস্থ্য রক্ষা করা এবং রোগীর রোগ নিরাময় করা। েসক্ষেত্রে আমাদের পরিচিত সাধারণ অসুখে দারুণ কার্যকরী বিভিন্ন ভেষজ। কোন রোগে কোন ভেষজ সহায়ক, জানালেন কোচবিহারের নাটাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের সিনিয়ার আয়ুর্বেদিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ বাসবকান্তি দিন্দা
অ্যাজমা
পিপুল গুঁড়ো মধুর সঙ্গে খেলে অ্যাজমা অনেকটা কমে যায়। হাফ চামচ থেকে এক চামচ বহেড়ার গুঁড়ো হাফ চামচ বা এক চামচ মধুর সঙ্গে দিনে দু’বার খেতে হবে। এছাড়া গরম জলে হরীতকীর গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন। শ্বাসকষ্ট ও কাশিতে কফ বাইরে বের করতে বাসক পাতার রস ২-৩ চামচ রস মধু সহ সকাল ও সন্ধ্যায় খেতে পারেন।
যেগুলো শ্বাসকষ্ট বাড়ায়, যেমন দই-কলা, মিষ্টি, টক জাতীয় খাবার, বাদাম ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো। আবহাওয়া পরিবর্তন, পশুর লোম ঘাস ও ফুলের রেণু শ্বাসকষ্ট বাড়ায়।
ওবিসিটি
সকালে খালি পেটে গরম জলে লেবুর রস, আদার রস ও মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এক থেকে দু’চামচ িত্রফলা ২০০ মিলি জলে রাতে ভিজিয়ে পরদিন সকালে ফুটিয়ে ১০০ মিলি করে ছেঁকে এক থেকে দু’চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
ওজন কমাতে যবের রুটি বেশ কার্যকরী। সেক্ষেত্রে আটার সঙ্গে যব মিশিয়ে রুটি তৈরি করে খেতে পারেন। আমন্ড ফ্যাট বার্ন করে। ডাল পেট ভরা রাখে এবং বেশি খাবার সম্ভাবনা কমায়।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে
হাফ চামচ থানকুনির রস দুধে মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া দু’চামচ ব্রাহ্মীশাকের রস সকালে খালি পেটে এক মাস খেতে পারেন। হাফ চামচ অশ্বগন্ধা গুঁড়ো দুধের সঙ্গে মিশিয়ে দুপুর ও রাতে খাবার পর খেতে পারেন।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে খাদ্যতালিকায় খেজুর, আমন্ড, আমলকী, রসুন, আপেল, কলা, গাজর, সয়াবিন, ডিমের কুসুম ও রুই মাছ রাখতে পারেন।
সর্দি
সমপরিমাণ তুলসী পাতা ও শুকনো আদাকে চায়ের মতো তৈরি করে দিনে তিনবার খেতে হবে। এছাড়া আদার রস, তুলসী পাতার রস হাফ চামচ থেকে এক চামচ করে, হাফ চামচ বা এক চামচ মধুর সঙ্গে দিনে দু-তিন বার খেতে হবে। এছাড়া গোলমরিচের গুঁড়ো বা আমলকীও উপকারী। এক কাপ দুধের সঙ্গে হাফ বা এক চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন।
নাক বন্ধ হলে তুলসী পাতা ফুটিয়ে সেই বাষ্প নাক দিয়ে টানতে হবে। সেইসঙ্গে গরম ও সুষম খাবার খাওয়ার পাশাপাশি বিশ্রাম নেওয়া দরকার।
কাশি
শুকনো কাশি হলে আদা চুষতে হবে। বাসক পাতার রস বা ক্বাথের সঙ্গে পিপুল এক চিমটে এবং হাফ চামচ বা এক চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। গোলমরিচ গুঁড়ো মধুর সঙ্গে খেলে কাশি কমে। ইয়োসিনোফিল বেড়ে অ্যালার্জিজনিত কাশি হলে লবঙ্গ খেতে পারেন।
জ্বর
৬০ গ্রাম গুলঞ্চ, হাফ চামচ শুকনো আদার গুঁড়ো ১০-১২ গ্লাস জলে মিশিয়ে হালকা ফুটিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। তারপর হাফ কাপ করে ক্বাথ তৈরি করতে হবে। এছাড়া এক থেকে দু’চামচ তুলসী পাতার রস হাফ চামচ গোলমরিচ গুঁড়োর সঙ্গে মিশিয়ে গরম করে দিনে তিনবার খেতে হবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
গুড়ুচি বা গুলঞ্চের কাণ্ডের হাফ চামচ রস সকালে খালি পেটে মাসখানেক খেতে হবে। এছাড়া তুলসী পাতার রসও খেতে পারেন।
বদহজম
মৌরি আদা, জিরা গোলমরিচ দিয়ে জল ফোটাতে হবে। তারপর তা ঠান্ডা করে ছেঁকে খেতে হবে। শুকনো আদা গরম জলে মিশিয়ে খেতে পারেন। খাওয়ার পর দিনে তিনবার জলে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া দুপুর বা রাতে খাবার পর মৌরি চিবিয়ে খেয়ে ঈষদুষ্ণ জল খাবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য
এক্ষেত্রে ত্রিফলা পাউডার বেশ কার্যকরী। রাতে শোয়ার সময় হালকা গরম জলে হাফ থেকে এক চামচ এই পাউডার মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
কৃমি
নিম বা কালমেঘের ৫-৭টা কাঁচা পাতা সকালে খালি পেটে ৭-৮ দিন খেতে হবে। নরম আনারসের সাদা গোড়া বেটে সেই রস কিংবা সজনে পাতাও বেটে খেতে পারেন।
অম্বল ও বুকজ্বালা
এক কাপ জলে লেবুর রস ও সন্ধক লবণ মিশিয়ে খাবার পর খেতে পারেন। এছাড়া জোয়ান লবণের সঙ্গে িকংবা আমলকীর রস বা গুঁড়ো খেতে পারেন।