শিবশংকর সূত্রধর, কোচবিহার: ২০২৪-’২৫ মরশুমে বাংলার রনজি সিনিয়ার ক্রিকেট দলে (Bengal Cricket Team) সুযোগ পেলেন তুফানগঞ্জের অনন্ত সাহা। শিবশংকর পাল (ম্যাকো)-এর পর রাজ্যকে দ্বিতীয় পেসার উপহার দিল তুফানগঞ্জ (Tufanganj)। এতদিন ভারতীয় রেলের হয়ে খেলা অনন্ত এবার মহম্মদ সামি, ঋদ্ধিমান সাহাদের সতীর্থ হতে চলেছেন। তাঁর এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত কোচবিহারের (Coochbehar) ক্রীড়ামহল। ম্যাকোর কাছেও পেস বোলিংয়ের তালিম নিয়েছেন অনন্ত। ছাত্র প্রসঙ্গে শিবশংকর বলেছেন, ‘অনন্ত পরিশ্রমী। আমি আশাবাদী ও ভালো পারফর্ম করবে।’ বর্তমানে কঠোর অনুশীলনের মধ্যে রয়েছেন অনন্ত। অনুশীলনের ফাঁকে তিনি বলেন, ‘সম্ভাব্য দলের তালিকা প্রকাশ হয়েছে। সেখানে নিজের নাম দেখে ভালো লাগছে। ভালো খেলাটাই আমার প্রধান লক্ষ্য।’
ছোটবেলা থেকেই অনন্তর ক্রিকেট অন্ত প্রাণ। তুফানগঞ্জের চিলাখানা হাইস্কুলের পড়ুয়া অনন্ত পড়াশোনার থেকে খেলাধুলোই বেশি করত। অনন্তরা পাঁচ ভাইবোন। ছোট্ট একটি মুদির দোকান থেকে সংসার চালাতেন বাবা অমৃতলাল সাহা। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর সংসারে ছেলেকে ক্রিকেটার তৈরি করার স্বপ্ন যেন অধরাই ছিল দুঃস্থ ওই পরিবারের। ২০১৩ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর আরও আর্থিক সংকট দেখা দেয়। পরিবারের হাল ধরতে নিজেও মুদির দোকানে বসেছেন অনন্ত।
পাড়ার একটি ম্যাচে অনন্তর অসাধারণ বোলিং নজর কেড়েছিল ক্রিকেট কোচ উত্তম সাহার। এরপর তাঁর হাত ধরেই অনন্তর পথ চলা শুরু হয়। কোচবিহারের ঘোষপাড়া ইউথ ক্লাব ও জেলা দলে খেলেছেন। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব সুব্রত দত্ত বলেছেন, ‘আমরা আশাবাদী অনন্ত নিজের সেরাটা দিয়ে সকলের নজর কাড়বে।’
তুফানগঞ্জ কলেজে প্রথম বর্ষে পড়াকালীন অনন্ত কলকাতায় চলে যান। কঠোর অনুশীলনের পর অনূর্ধ্ব-২৩ বাংলা ও জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। খেলার সুবাদেই পরবর্তীতে রেলে চাকরি। রেল দলের নিয়মিত সদস্য হয়ে ওঠেন। ২০১৮-’১৯ সিকে নাইডু ট্রফিতে ১০ ম্যাচে ৫২টি উইকেট নিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়ে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের বর্ষসেরা পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন অনন্ত।
বৃহস্পতিবার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল (সিএবি)-এর তরফে ২০২৪-’২৫ মরশুমের সম্ভাব্য ক্রিকেটারদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ৩১ জন ক্রিকেটারের সেই তালিকায় মহম্মদ সামি, ঋদ্ধিমান সাহা যেমন রয়েছেন তেমনই রয়েছেন কোচবিহারের অনন্ত।