আলিপুরদুয়ার: পড়াশোনায় আলিপুরদুয়ার যেমন এগিয়ে তেমনই শহরে বজায় থাকছে সংস্কৃতির ঐতিহ্যও। দুটোই বোঝা যায় সম্প্রতি দুটো ঘটনায়। কয়েকদিন আগেই যখন উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট দেয় তখন দেখা যায় জেলা শহর থেকেই রাজ্যে সপ্তম স্থান অধিকার করেছে এক ছাত্র। এখন কত্থক নৃত্যে কেন্দ্রের স্কলারশিপ পেল আলিপুরদুয়ারের দুই কিশোরী। অনেকেই বলছে আলিপুরদুয়ার জেলার সংস্কৃতিক জগতে এক নতুন পালক যুক্ত হল এবং এতে জেলার সাংস্কৃতিক মহলও বেশ উচ্ছ্বসিত। ভারত সরকারের সংস্কৃতিমন্ত্রককের অধীনে থাকা সেন্টার ফর কালচারাল রিসোর্স অ্যান্ড ট্রেনিং(সিসিআরটি) সংস্থার স্কলারশিপের জন্য আলিপুরদুয়ার শহরের দুই কিশোর নির্বাচিত হয়েছে।
এই সংস্থার পক্ষ থেকে সংস্কৃতি জগতের বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিভিন্ন বিভাগে স্কলারশিপ দেওয়া হয়। আলিপুরদুয়ার শহরের কর্ণিকা পাল ও অদ্রিজা সরকার কত্থক নৃত্যে জুনিয়ার বিভাগে এই স্কলারশিপ পেয়েছে। দুজনকেই সিসিআরটির পক্ষ থেকে প্রতিমাসে স্কলারশিপ হিসেবে টাকা দেওয়া হবে। এছাড়াও ওই সংস্থার বিভিন্ন কর্মশালাতেও অংশ নিতে পারবে ওই দুই কৃতি।
কর্ণিকার বাড়ি শহরের প্রভাত সংঘের গলিতে। শহরের লিটিল ফ্লাওয়ার ইংলিশ স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী সে। অদ্রিজার বাড়ি শহরের এগারো হাত কালীবাড়ি এলাকায়। শহরের নিউ টাউন গার্লস হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ও।
ছোট থেকেই দুজনের নাচের প্রতি আগ্রহ ছিল এবং তাদের তালিম হচ্ছিল রুদ্রাক্স পারফর্মিং আর্ট সেন্টারে। কর্ণিকা নৃত্যগুরু মধুমিতা রায় ও মালতি শ্যামের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছে আগে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে অদ্রিজা রাজ্যস্তরেও নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে সুনাম অর্জন করেছে। এছাড়াও নৃত্যের অনেক কর্মশালা এমনকি পন্ডিত বিরজু মহারাজের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছে অদ্রিজা। এদিন দুজনেই জানাল, এই স্কলারশিপ পেয়ে তারা খুশি।
এই সাফল্যে তাদের বাবা মায়েরা খুবই আনন্দিত। ওদের নৃত্যগুরু দেবজয়া সরকার বলেন, ‘প্রান্তিক এই জেলা থেকে এই সাফল্য নিশ্চিতভাবে জেলার সাংস্কৃতিক চেতনার মানকে বৃদ্ধি করবে। ওরা দুজনে নিঃসন্দেহে খুবই নিষ্ঠার সঙ্গে নৃত্যের সাধনা করে এবং এই সাফল্য ওদের এই সাধনার পথকে আরও সুদৃঢ় করবে। সরকারের এই ধরনের বিভিন্ন প্রকল্পগুলিতে আমাদের জেলার প্রতিভাবান ছেলেমেয়েরা অংশগ্রহণ করুক এই বার্তাটুকুই আমি দিতে চাই। ওদের সাফল্যে আমি সত্যিই খুব আনন্দিত।’