উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ তৃণমূলের হাই কমান্ডের নির্দেশকে অমান্য করে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী। নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস সহ দেশের ২০টি রাজনৈতিক দল। এই বিক্ষুব্ধ দলগুলির বক্তব্য ছিল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে বাদ দিয়ে সংসদের নতুন ভবনের উদ্বোধন হওয়ায় তাঁরা এই অনুষ্ঠান বয়কট করবে। রবিবার শিশির-দিব্যেন্দু শুধু দিল্লিই যাননি, অনুষ্ঠানের ব্যস্ততার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়ও করেছেন তাঁরা।
তৃণমূলের নির্দেশ অমান্য করে সংসদ ভবনের উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের নির্দেশকে এর আগেও অমান্য করতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের এই দুই সাংসদকে। এর আগে গত বছর জুলাই মাসে সাংবাদিক বৈঠক করে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন বয়কট করার দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দলের সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে এনডিএ শিবিরের প্রার্থী জগদীপ ধনখড়কে ভোট দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন সাংসদ পিতা-পুত্র।
খাতায় কলমে শিশির-দিব্যেন্দু তৃণমূলের সাংসদ হলেও শুভেন্দুর দলবদলের পর অধিকারী পরিবারের সঙ্গে বেড়েছে তৃণমূলের দূরত্ব। তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘বয়কটের কোনও বার্তা আমাদের কাছে আসেনি। আর নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। সেই ঘটনার সাক্ষী থাকতে চেয়েছিলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে ভাল লাগছে। এতে রাজনীতি খোঁজা ঠিক হবে না।’’
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সাল থেকে টানা তিনবার তৃণমূলের প্রতীকে কাঁথি থেকে সাংসদ হয়েছেন শিশির। আর পুত্র দিব্যেন্দু ২০১৬ সালে তমলুক লোকসভার উপনির্বাচন জিতে পরপর ২ বার তৃণমূলের প্রতীকে সাংসদ হয়েছেন। কিন্তু ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর শিশির পুত্র শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করলে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। ২০২১ সালের বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দল হলে, বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব পান নন্দীগ্রাম বিধায়ক শুভেন্দু। তার পর থেকেই তাঁর নিশানায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর তাতেই অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে ঠেকেছে।
শুভেন্দুর তৃণমূল ছাড়ার পরেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শিশিরকে। সরানো হয় দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকেও। ২০২১ সালের ১ মার্চ এগরায় বিজেপির বিধানসভা ভোটের প্রচারে অমিত শাহের সভামঞ্চে হাজির হয়ে বক্তৃতা করতেও দেখা গিয়েছিল শিশির অধিকারীকে। বিধানসভা ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর তাঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।