সৌকর্য সোম ও সম্বিত গুপ্ত, মালদা: বহু বিতর্ক ও অভিযোগ ঘিরে থাকলেও বিগত বেশ কিছুদিন ধরে গবেষণায় উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে চলেছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (University of Gour Banga)। বিভিন্ন নামী আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশনা, বিজ্ঞানীদের গবেষণার স্বার্থে বিদেশযাত্রা এমন নানা পালক জুড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুকুটে। মালদা ও দার্জিলিং-এর বায়ুদূষণের মাত্রা, ডিপ ফেক থেকে বাঁচার উপায় খুঁজতে অধ্যাপকের বিদেশপাড়ি এমন নানা সাফল্য রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুলিতে। এবারে অধ্যাপক সৌগত পাল ও তাঁর ছাত্রছাত্রীদের গবেষণার জন্য ‘নেচার ইনডেক্স’-এর রসায়ন বিভাগের সামগ্রিক তালিকায় ৬৭তম স্থানে উঠে আসল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্বখ্যাত ‘নেচার’ ইনডেক্স-এ সারা দেশের প্রথম ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জুড়ল গৌড়বঙ্গের নাম। ‘নেচার’ ইনডেক্সের অ্যাকাডেমিক তালিকায় ৮৮তম স্থানে রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম তিনে রয়েছে আইআইএসইআর (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ), আইএসিএস(ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স), আইআইটি (খড়্গপুর)। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ও ৪৯ স্থানে রয়েছে।
রেজিস্ট্রার বিশ্বজিৎ দাস গর্বের সঙ্গে জানান, ‘গত ১ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় এক জোয়ার এসেছে। আমাদের গবেষকরা দেশে-বিদেশে সমাদৃত হয়েছেন। বিভিন্ন বিষয়ে সামগ্রিকভাবে গবেষণার উন্নতি, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার এক আদর্শ পরিবেশ তৈরি করেছে।’
২০১৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে বিশ্বের অন্যতম উৎকৃষ্ট বিজ্ঞান জার্নাল ‘নেচার’-এর তরফে চালু করা হয়, এই নেচার ইনডেক্স। যা সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গবেষণার বিচার করে এক তালিকা প্রকাশ করে। তবে এই তথ্যের তালিকায় আসা সহজ নয়, শুধুমাত্র নির্বাচিত ১৪৫টি জার্নালে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হলে তবেই এই ইনডেক্স-এর মূল্যায়নে আসা যায়।
প্রথম বিশ্বের তাবড় প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পাশে দাঁড়িয়ে একই সঙ্গে মালদার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উচ্চারিত হবে, যার জন্য ক্যাম্পাস জুড়ে এক খুশির হাওয়া।
ক্রমশ কমে আসা শক্তির উৎস এবং বাড়তে থাকা জনসংখ্যার এই পৃথিবীতে বর্তমান সময়ে অপ্রচলিত শক্তি নিয়ে গবেষণার তাগিদ অগ্রাধিকার রাখে। এর মধ্যে সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় সৌরশক্তি। তবে এই শক্তির উৎসের ব্যবহারে এখনও অনেক ফঁাক রয়েছে। আর এখানেই উল্লেখযোগ্য সৌগত পালের গবেষণা। সোলার প্যানেলে সূর্যের আলো ধরে রাখা, এখনও বেশ ব্যয়সাপেক্ষ। এই বিষয়কে মাথায় রেখেই সৌগতবাবু প্যানেলের পারমাণবিক গঠন বিষয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয়স্তরের বিভিন্ন সেমিনারে তঁার এই গবেষণা বিশেষ খ্যাতি পেয়েছে।