রূপক সরকার, বালুরঘাট: তপনের সালাশে নেশামুক্তি কেন্দ্রে চিকিৎসা করতে আসা একজনের মৃত্যুর পর এবার নড়েচড়ে বসতে চলেছে প্রশাসন। জেলায় চলা বেআইনি নেশামুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযানে নামতে চলেছে প্রশাসন।
প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাতারাতি গজিয়ে উঠছে লাইসেন্সবিহীন নেশামুক্তি কেন্দ্র। আগেও দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভিন্ন প্রান্তে নেশামুক্তি কেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। টনক নড়েনি প্রশাসনের। বেআইনিভাবে চলার নেশামুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
নেশামুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, নেশা ছাড়ানোর নামে নেশামুক্তি কেন্দ্রে মারধর করা হয় রোগীদের। এমনকি খাবার কম দেওয়া সহ বিভিন্ন রকম অভিযোগ ওঠে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, নেশামুক্তি কেন্দ্রে যাঁরা থাকেন, তাঁরাই পরবর্তীতে নতুন করে নেশামুক্তি কেন্দ্র খোলেন। সেটাও কোনও সরকারি নিয়ম না মেনেই।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ২৫ থেকে ৩০টি নেশামুক্তি কেন্দ্রের কোনওটারই বৈধ লাইসেন্স নেই। তারপরও দিনের পর দিন চলে আসছে এইসব অবৈধ নেশামুক্তি কেন্দ্র। বিগতদিনে বালুরঘাটের পরানপুরে নেশামুক্তি কেন্দ্রে একজনকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে অভিযোগ দায়ের হয় বালুরঘাট থানায়। এরপরই সেই নেশামুক্তি কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এরপর গঙ্গারামপুরে একই ধরনের অভিযোগ ওঠে।
গত মঙ্গলবার তপনের সালাস এলাকায় চলা নেশামুক্তি কেন্দ্রে সালাউদ্দিন সরকার নামে একজনের মৃত্যু হয়। এনিয়ে বুধবার তপন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। বারবার নেশামুক্তি কেন্দ্রে মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলাজুড়ে।
জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, ‘নেশামুক্তি কেন্দ্রে রোগীর মৃত্যুর খবর শুনেছি। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলায় বেআইনিভাবে কোনও নেশামুক্তি কেন্দ্র চলতে দেওয়া যাবে না। অবৈধ নেশামুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। সেই সঙ্গে এনিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ করা হবে। তবে সরকারি নিয়ম মেনে নেশামুক্তির কেন্দ্র খুলতে কী কী পদ্ধতির রয়েছে তা জানানো হচ্ছে।’
জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তালের বক্তব্য, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস বলেন, ‘জেলায় নেশামুক্তি কেন্দ্রের জন্য কোনও লাইসেন্স দেওয়া হয়নি।’