বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: রাতে ভাত খেতে বসেছিলেন। মা বলেন বিয়ে করতে। তাতেই আপত্তি জানান ছেলে। শুরু হয় দুজনের মধ্যে বচসা। অভিমানে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেন মা। আর তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম ছেলেও। মঙ্গলবার রাত দশটা নাগাদ মা ও ছেলেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। বুধবার সকালে বার্ন ইউনিটে মৃত্যু হয় মায়ের। গুরুতর জখম অবস্থায় বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ছেলে।
মৃত বৃদ্ধার নাম বীণা কাঞ্জিলাল (৭২)। ছেলের নাম দুলাল কাঞ্জিলাল (৪৪)। তাঁদের বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) করণদিঘি (Karandighi) থানার বিন্দাবাড়িতে। এদিন বৃদ্ধার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেয় রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই বৃদ্ধার তিন ছেলে। বড় ছেলে করণদিঘি বিডিও অফিসে গ্রুপ সি পদে কর্মরত ছিলেন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় বড় ছেলের। ছোট ছেলে তপন থানায় পুলিশ অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। চার মাস আগে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ওই বৃদ্ধা স্বামীর পেনশন নিয়ে মেজো ছেলের সঙ্গে থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে ভাত খেতে বসার সময় মেজো ছেলেকে বিয়ে করতে বলেন বীণা। ছেলের সঙ্গে মায়ের বচসা শুরু হয়। এরপর গায়ে পেট্রোল ঢেলে ওই বৃদ্ধা আত্মহত্যার চেষ্টা করলে মাকে বাঁচাতে যান ছেলে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
মেজো ছেলে দুলাল বলেন, ‘আমাকে মা বিয়ে করার জন্য মাঝেমধ্যেই চাপ দিত। ওইদিনও আমি মাকে বলে দিয়েছিলাম, আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়। এরপর রান্নাঘরে গিয়ে সারা শরীরে পেট্রোল ঢালার পর আগুন লাগিয়ে দেয়। অবস্থা দেখে মাকে বাঁচাতে গিয়ে আমিও গুরুতর জখম হই।’
রায়গঞ্জ থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।