বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: বিএসএফের এক জওয়ানের দুই কন্যাসন্তান সহ স্ত্রীকে ভুল বুঝিয়ে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং তার সঙ্গে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা আর আট ভরি সোনা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় সোমবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে এসপি-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন সিআরপিএফের জওয়ান।
অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের নাম এনামুল হক, বাড়ি উত্তর দিনাজপুর (Uttar Dinajpur News) জেলার ইটাহার থানার মাধবপুর গ্রামে। অভিযুক্ত ওই পুলিশ অফিসার বালুরঘাট থানায় এএসআই পদে কর্মরত। রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আক্তার বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ ওই জওয়ানের স্ত্রী টুম্পা খাতুন তাঁর দুই কন্যাসন্তানকে নিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের কুপরামর্শে সাড়ে আট লক্ষ টাকা আর আট ভরি সোনা নিয়ে অন্যত্র লুকিয়ে রাখে। এই ঘটনায় ইটাহার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ওই সিআরপিএফের জওয়ান সাদ্দাম হোসেন। কিন্তু থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও কাজের কাজ কিছু না হওয়ায় এদিন অর্থাৎ সোমবার বিকেলে রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন তিনি। লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আধা সামরিক বাহিনীর ওই জওয়ান।
এই প্রসঙ্গে সিআরপিএফ জওয়ান সাদ্দাম হোসেনের অভিযোগ, ‘আমার স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তানকে অপহরণ করেছে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার এনামুল হক। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অপর এক মহিলা, তার নাম রাখি খাতুন।বাড়ি মালদা জেলার চাঁচল থানার কানুয়া গ্রামে।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘ফোনে ওই পুলিশ অফিসার আমাকে বলেন, তোর স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান আমার হেপাজতে রয়েছে। পুলিশে চাকরি করি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কোনও লাভ হবে না। আমার স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তানকে ফিরে পাওয়ার জন্য ইটাহার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও কোনও কাজের কাজ না হওয়ায় রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছি। ওই পুলিশ অফিসার আমার সাড়ে আট লক্ষ টাকা ও আট ভরি সোনা আত্মসাৎ করেছে। আশঙ্কা, টাকা আর সোনা হাতানোর পর আমার স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তানকে মেরে ফেলে দিতে পারে।’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল থেকে এদিন পর্যন্ত ওই জওয়ানের পরিবারের কাছে একাধিক ফোন থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। কখনও বলা হচ্ছে তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান ডালখোলায় রয়েছে। কখনও বলা হচ্ছে মালদায় রয়েছে। আবার কখনও বলা হচ্ছে বালুরঘাটে রয়েছে। চরকির মতন পাক খাচ্ছেন জওয়ানের পরিবারের সদস্যরা। এই প্রসঙ্গে সিআরপিএফ জওয়ানের বাবা আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমার বৌমা ও আমার দুই নাতনিকে অপহরণ করেছে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার। নগদ সাড়ে আট লক্ষ টাকা আর আট ভরি সোনাও আত্মসাৎ করেছে। হাতানোর জন্যই এই কর্মকাণ্ড করেছে। আমি চাই অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিক পুলিশ সুপার।’