বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও বন্ধ করা যাচ্ছিল না জলের অপচয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছে এক হাজার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাল জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর। দপ্তরের কর্তাদের অভিযোগ, জল জীবন মিশন প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তোলিত জলের অপচয় ও জল চুরি করে পরিস্রুত পানীয় জল (Drinking Water) দিয়ে জমিতে চাষের জন্য জল, গবাদিপশুদের স্নান করানো, জমিতে জল দেওয়া, অনৈতিকভাবে পাম্প চালিয়ে বেশি পরিমাণে জল টেনে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেই যাচ্ছিল লাগাতার। পরিস্থিতি এমন জায়গায় যায় যে কিছুদিন আগে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এধরনের সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন পিএইচইকে। তারপরেই নড়েচড়ে বসে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর।
জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুর (Uttar Dinajpur) জেলায় নয়টি ব্লকে ১০০০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তার মধ্যে ৮০০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ সঠিক ব্যবস্থা নেওয়ায় ঠেকানো গিয়েছে দেদার জল অপচয়। আর এই পদক্ষেপের পর থেকে জেলার গ্রামাঞ্চলগুলিতে সুষ্ঠুভাবে জল জীবন মিশনের কাজ চলছে বলে দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
পিএইচইর উত্তর দিনাজপুর জেলার এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা ৫৬টি জেনারেল ডায়েরির মাধ্যমে ১০০০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। অতি দ্রুত সেই সমস্ত অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে ৮০০ জনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে পুলিশ পদক্ষেপ নিয়েছে।’
জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর ৬ লক্ষ ৯০ হাজার বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ নিয়ে কাজ করছে। তারমধ্যে ২ লক্ষ ৩৮ হাজার বাড়িতে জলের পাইপলাইনের সংযোগ দেওয়া হয়ে গিয়েছে। একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জেলায় গত ৬ মাসে ৪০ হাজার বাড়িতে জল পৌঁছেছে। তবে এখন রাজ্য স্তর থেকে দফায় দফায় মনিটরিং বৈঠক হচ্ছে। জেলাতে তিনজনের একটি কমিটিও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের কাজ নিয়ে বৈঠক করছে। জমিজমা, বিদ্যুৎ ইত্যাদি সমস্যা নিয়েও নিয়মিত বৈঠক চলছে। প্রশাসন ও পুলিশের সমন্বয়ে দ্রুত কাজ শেষ হবে বলেই মনে করছেন দপ্তরের কর্মীরা।
রায়গঞ্জের পরিবেশবিদ জগন্নাথ সাহা বলেন, ‘পাইপে অবৈধভাবে হূক করায় পানীয় জলের মধ্যে থেকে কাদা, কেঁচো, কেন্নো বেরোচ্ছে। এই ঘটনায় নদীর জল কমে যাচ্ছে । নদীর বাস্তুতন্ত্রের ব্যাঘাত ঘটছে।’