বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: একের পর এক বন্দি পালানোয় উত্তর দিনাজপুর (Uttar Dinajpur) জেলা প্রশাসন চরম অস্বস্তিতে। তাদের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে তুলল রাজ্য কারা দপ্তর। সম্প্রতি কারা দপ্তরের তরফে জেলা প্রশাসনের কাছে এই বিষয়ে সবিস্তার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। লাগাতার বন্দি উধাও হওয়ার ঘটনায় জেলা সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ আদালতে ভার্চুয়াল হাজিরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত জুনে জেল হেপাজত থেকে পালায় ভীম সাহা। একবার নয়, দু’বার। তবে ওই আসামি পালিয়েছিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। গত অগাস্টে পালায় প্রেমচাঁদ বর্মন। ঠিক পরের মাসে সেপ্টেম্বরে পালায় শাহজামাল মিয়াঁ। এ বছর জানুয়ারিতে পালিয়েছিল বিশ্বজিৎ দাস।
পরের পর বন্দি পালানোর ঘটনায় জেলা প্রশাসনের অস্বস্তি কিছুতেই কাটছিল না। এর মধ্যে পাঞ্জিপাড়ায় পুলিশকে গুলি করে বন্দি পালানোর ঘটনা জেলা পুলিশ প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল। তবে চুপ করে বসে নেই রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষও।
ইতিমধ্যে জেলা সংশোধনাগার থেকে একটি প্রাথমিক কনফিডেন্সিয়াল রিপোর্টও হাতে পেয়েছে রাজ্য সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, সেই রিপোর্টে রয়েছে ‘এনকাউন্টারে’ মৃত সাজ্জাকের সঙ্গে জেলে কে কে দেখা করতে এসেছিল, জেলের ভিতরে তার গতিবিধি কেমন ছিল, গুলি করার পরিকল্পনা সে জেলের বাকি বন্দিদের সঙ্গে আলোচনা করেছিল কি না। নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত সাজ্জাকের দিদি মর্জিনা খাতুন তার সঙ্গে জেলে দেখা করতে এসেছিল কি না।
সূত্রের খবর, সাজ্জাক ও তার সহবন্দি আব্দুল হোসেন ওরফে আবাল জেলা সংশোধনাগারে বসেই পালানোর ছক কষে। ইসলামপুর আদালত (Islampur Court) চত্বরে সাজ্জাকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দিয়েছিল ওই আব্দুল হোসেন ওরফে আবাল। তাই একদিকে যেমন পুলিশ আব্দুল হোসেনের খোঁজ শুরু করেছে, তেমনই সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষও বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখছে।
ইতিমধ্যে অ্যাডিশনাল আইজি (কারা) সুদীপ্ত চক্রবর্তী ও জলপাইগুড়ি রেঞ্জের ডিআইজি (কারা) শুভেন্দুকৃষ্ণ ঘোষ রায়গঞ্জ সংশোধনাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরেজমিনে দেখেছেন। সূত্রের খবর, তাঁরা একটি কনফিডেন্সিয়াল রিপোর্টও রাজ্য সংশোধনাগার কর্তাদের কাছে পাঠিয়েছেন।
পাশাপাশি সংশোধনাগারে বন্দিদের মানসিক চাপ কাটাতে কাউন্সেলিং চলছে। তারপরও কয়েক দফায় তিন বন্দি পালিয়ে যাওয়ার অস্বস্তি বেড়েছে জেল কর্তৃপক্ষের। যার সর্বশেষ সংযোজন সাজ্জাক পর্ব। এই শীতেও জেলার পদস্থ কর্তাদের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। কী করে সমাধান মিলবে তা নিয়ে উদ্বেগ।