ফুলবাড়িঃ কাজ শুরু হওয়ার পরপরই বন্ধ হয়ে যায় মাথাভাঙ্গা-২ (Mathabhanga) ব্লকের বড় শৌলমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব বালাসুন্দর এলাকায় সরকারি জল প্রকল্পের কাজ। প্রতি ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দিতে গত বুধবার শুর হয়েছিল জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের (Public Health Department) জল জীবন মিশন প্রকল্পের কাজ। অভিযোগ শাসকদলের ষড়যন্ত্রের কারণেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে প্রকল্পের কাজ। এরই প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে কাজ শুরু দাবিতে শনিবার বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় মহিলারা। মাথাভাঙ্গা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের সাবলু বর্মনের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। একই দাবিতে এদিন বিকেলে স্থানীয় পূর্ব বালাসুন্দর বাজারে মিছিল করে বিজেপি।
পূর্ব বালাসুন্দরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের জল জীবন মিশন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল বুধবার। কাজ শুরু হওয়ার পরপরই বন্ধ হয়ে যায় কাজ। অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই কাজ বন্ধ রয়েছে। শনিবার প্রকল্পস্থল থেকে কাজের মেশিন ও অন্যান্য সামগ্রী তুলে নিয়ে যাওয়া হবে বলে খবর চাউর হয় এলাকায়। যাবতীয় জিনিশ ও প্রকল্পের পাইপ নিয়ে যাওয়ার জন্য আনা হয়েছিল দুটো ট্রাক। আর সেই সময়ই ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি জল প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনওভাবেই কাজের যন্ত্রপাতি এখান থেকে নেওয়া যাবে না।
এলাকার বাসিন্দা তথা স্থানীয় বিজেপি নেতা বনদেব সরকার বলেন, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এনওসি দেওয়ার পর এখানে জল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাবলু বর্মন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে কাজ বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। এবং ওনাদের লোকের জমিতে প্রকল্প তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন। তাই তিনি অন্যত্র প্রকল্পটি নিয়ে যেতে চাইছেন। কিন্তু আমরা তা কোনওদিন হতে দেব না। তাই এদিন বিক্ষোভ দেখিয়ে প্রকল্পের কাজের মেশিন আটকে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মাথাভাঙ্গা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাবলু বর্মন বলেন, “প্রকল্পটি তৈরির জন্য আগে যে জমিদাতার সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল। তাঁর জমিতেই প্রকল্প তৈরি হবে। বিজেপির অঞ্চল প্রধান বা এলাকার অন্য কেউ জোরপূর্বক সেখান থেকে কাজটি অন্যের জমিতে করানোর সিদ্ধান্ত নেন”। তিনি আরও বলেন, “আমরা আইন ও সংবিধানের লোক। তাই আইন ও সংবিধান বহির্ভূত কাজ করব না। ওরা অহেতুক এই সমস্ত জিনিস করছেন। চক্রান্ত করছেন। প্রকল্প অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সরকারি কাজে বাধা দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
বিজেপির দখলে থাকা বড় শৌলমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জয়ন্ত দে বলেন, “জলের গ্রামীণ কমিটির পক্ষ থেকে রেজুলেশন করে আমরা গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কাজের জন্য এনওসি দিয়েছি। কিন্তু, কাজের শুরুর দিনই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়। গত তিনদিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য এলাকার উন্নয়ন করে মানুষের বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাবলু বর্মন যিনি তার সংসার ঠিক রাখতে পারেন না। তিনি রাজনীতির রং লাগিয়ে এলাকার উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করছেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতার এক্তিয়ারের বাইরে তিনি তাঁর দলীয় প্রভাব খাটানোর পাশাপাশি প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখানোর চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে মিটিং করা হয়। কিন্তু আমাকে জানানো হয়নি। এলাকায় জল প্রকল্প তৈরির জন্য মেশিন এল। আবার কেনই বা মেশিন নিয়ে যাওয়া হবে। তাই হয়তো বিক্ষোভ দেখিয়ে এলাকার মানুষ মেশিন আটকে দিয়েছেন।