বর্ধমান: বিধানসভা ভোটের সময়ে বিজেপিতে ভিড়ে গিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছিলেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল। ভোটে বিজেপির ভরাডুবির পরেই ’তৃণমূলেই আছি’ বলে দাবি করলেও দলীয় কর্মীদের মন ভোলাতে পারেননি। যার পরিণাম স্বরূপ বুধবার নিজের সংসদ এলাকা পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় গিয়ে কার্যত ঘাড় ধাক্কা খেলেন তিনি। তাঁকে ঘিরে গো-ব্যাক শ্লোগান তোলার পাশাপাশি সুনীল মণ্ডলকে ‘চোর’ বলে কটাক্ষ করেন গ্রামবাসীরা। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারির সুরে তাঁকে কাটোয়ায় আর না ঢোকার কথাও জানিয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তড়িঘড়ি সাংসদকে নিয়ে গ্রাম ছাড়েন নিরাপত্তারক্ষীরা। ঘটনা প্রসঙ্গে খোদ সুনীল মণ্ডল মুখে কুলুপ আঁটলেও শোরগোল পড়েছে রাজনৈতিক মহলে।
জানা গিয়েছে, কাটোয়ায় মালঞ্চ থেকে দেয়াসিন যাওয়ার পথে পাকা সেতু তৈরির কাজ পাঁচ বছর ধরে ঝুলে রয়েছে। ঠিকাদার বদলে ফের শুরু হয়েছে কাজ। এদিন সেই সেতুর কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। যদিও বিক্ষোভের মুখে পড়ে মাঝপথ থেকেই ফিরতে হয় তাঁকে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সংসদ সদস্য তহবিল থেকে মালঞ্চ সেতু তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। তবে কাজ শুরুর কিছুদিন বাদেই বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ায় থমকে যায় সেতুর নির্মাণ। পরবর্তীতে অন্য ঠিকাদারের তত্ত্বাবধানে কাজ শুরু হলেও সেতু নির্মাণে জড়িত নির্মাণ শ্রমিক সহ অন্যান্য়দের বকেয়া প্রায় ২০ লক্ষা টাকা এখনও বকেয়া। গ্রামবাসীদের দাবি, সাংসদ সেই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ এক টাকাও পাননি।
যদিও সুনীল মণ্ডল জানিয়েছেন, ঠিকাদারের সঙ্গে গ্রামবাসীদের কী চুক্তি হয়েছিল তা জানা নেই। আগের ঠিকাদার এখন আর কাজ করছে না। ওই ঠিকাদার জানিয়েছে, দু-চার লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। যদিও গ্রামবাসীদের প্রায় ২০ লক্ষ টাকা বকেয়া। গ্রামবাসীদের সঙ্গে ওই ঠিকাদারের গণ্ডগোল মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল জেলাশাসককে। তাঁর কথায়, এসবের মধ্যে তিনি নেই। পাশাপাশি তাঁর দাবি, একটা ভুল বোঝাবুঝির জন্য তিনি বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন। তা মিটে গিয়েছে। তিনি এখন তৃণমূলের সঙ্গেই আছেন। সেটা দলের সুপ্রিমোও জানেন।
এদিনের বিক্ষোভের ঘটনা জানা নেই বলে দাবি কাটোয়ার বিধায়ক তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।