Viral student | পুলিশকর্তার সামনে গান গেয়ে ভাইরাল ছাত্র, রীতিমতো সেলিব্রিটি ময়নাগুড়ির সুজিত

ময়নাগুড়িঃ খোলা মাঠে আইসিকে পেয়ে ভাওয়াইয়া গান শুনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ভাইরাল ময়নাগুড়ির (Mainaguri) ছোট্ট সুজিত। ময়নাগুড়ি ব্লকের চূড়াভান্ডার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পূর্বদেহর ভান্ডার বাড়ির বাসিন্দা সুজিত মণ্ডল (Sujit Mandal)। পূর্বদেহর বিএফপি প্রাইমারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সুজিত। সে এখন রীতিমতো গ্রামের সেলিব্রিটি। আসলেও সে খুব ভালো গান গায়। লোকগানের তালিম নিচ্ছে সে গত টানা ৩ বছর ধরে। পার্শ্ববর্তী জলপাইগুড়ি ধূপগুড়ি এবং শিলিগুড়িতেও সে বিভিন্ন অনুষ্ঠান মঞ্চে লোকগান পরিবেশন করেছে। বাবা বিনয় মণ্ডল পরিযায়ী শ্রমিক। মা মিলনদাসী মণ্ডল গৃহবধূ। সুজিতের ছোট ভাই সবুজ প্রথম শ্রেণির ছাত্র। অভাবের সংসারে মায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় টানা ৩ বছর ধরে ময়নাগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের প্রখ্যাত ভাওয়াইয়া সংগীত শিল্পী এবং গুরু কামেশ্বর রায়ের তালিম নেয় সে নিয়মিত।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার। তখন সবে মাত্র স্কুল ছুটি হয় সুজিতের। স্কুল থেকে বেরিয়েই সামনে এগিয়ে যেতেই দেখা হয় ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষের সঙ্গে। আইসি গ্রাম ঘুরছিলেন। পাশ থেকে সুজিতের সহপাঠী এক জন বলে উঠল স্যার সুজিত খুব ভালো গান গায়। ব্যাস আর যায় কোথায়! খোলা মাঠেই সুজিত আইসিকে অসাধারণ একটি ভাওয়াইয়া গান শোনাল। সে গানের কথা শুনলেই শরীরে শিহরণ জাগবে। সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল আইসির সামনে খোলা মাঠে সেই গান গাওয়ার দৃশ্য।

গ্রাম হলেও এখন মোবাইল ঘরে ঘরে। একে একে বাড়িতে ভিড় জমান প্রতিবেশীরা। সুজিত মণ্ডল এদিন তাঁর বাড়িতে বসে বলে, গান আমার প্রাণ। ছোট বয়স থেকেই গান নিয়েই আছি। তবে সেটা অবশ্যই লোকগান। বাউল পল্লীগীতি ও ভাওয়াইয়া গান গাই। আমার জীবনে বড় প্রাপ্তি ময়নাগুড়ি থানার আইসি স্যারের সামনে সেই গান পরিবেশনের সুযোগ। খুব ভালো লেগেছে। তাঁর মা মিলনদাসী মণ্ডল বলেন, “ঈশ্বরের আশির্বাদ। এছাড়া এমন যোগসূত্র সম্ভব নয়। নানান প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও ছেলেকে গানের তালিম দেওয়া বন্ধ করিনি। ভাওয়াইয়া গানের প্রখ্যাত শিল্পী কামেশ্বর রায়ের কথায়, শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চা করে সে জানার জন্য। আসলে লোকগান গায়। বাউল ভাওয়াইয়া এবং পল্লীগীতি। প্রতিভা নিয়েই এসেছে।”

ঘটনায় গর্বিত প্রতিবেশী সকলেই। সমাজসেবী রামমোহন রায় এদিন সুজিতের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নেন। ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ বলেন, “স্কুল ছুটির পর বাচ্চাদের চকোলেট দিচ্ছিলাম। এতো সুন্দর একটি গান গাইল সুজিত খোলা মাঠে ভাবাই যায় না। কোনও জড়তা নেই। তার চাইতে আরও বেশি অবাক করা গানের কথা। গানটিকে বেছে নেওয়া। সব মিলিয়ে অসাধারণ।”