নয়াদিল্লি: সবুজ পিচ। পেসারদের স্বর্গ। দুই দলের তাবড় ব্যাটাররা রান করতে হিমসিম খেয়েছে। সেই পিচে ঋষভ পন্থ-ধামাকা দেখে মুগ্ধ শচীন তেন্ডুলকার। মিচেল স্টার্ককে ছক্কা হাঁকিয়ে ২৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ। ভাঙেন অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বিদেশি ব্যাটারদের দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির নজির।
৩৩ বলের ইনিংসে ৬১। ৬টি চার, ৪টি ছক্কা। বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারিতেই ৪৮ রান। তরুণ উইকেটকিপার-ব্যাটারকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়ে শচীন প্রতিক্রিয়ায় সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘পিচে বেশিরভাগ ব্যাটারের স্ট্রাইক রেট ৫০ বা তারও কম, সেখানে ঋষভের স্ট্রাইক রেট ১৮৪! সত্যিই অসাধারণ। প্রথম বল থেকে এদিন অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। দুর্দান্ত ইনিংস। ওর ব্যাটিং দেখাটা সবসময় আনন্দদায়ক, পুরোদস্তুর বিনোদন।’
বিরাট কোহলি অবশ্য সেই কানাগলিতেই। অস্ট্রেলিয়া সফরে অষ্টমবার অফস্টাম্প লাইনের ফাঁদে পা দিয়ে উইকেট খোয়ানোর দৃষ্টিকটু দৃশ্য এদিন অনেক প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল। সুনীল গাভাসকার-ইরফান পাঠানদের মতে, বারবার একই ভুল, বিরাটের মতো গ্রেট ক্রিকেটারের পক্ষে যা শোভা দেয় না।
গাভাসকারের মতে, শুধু মানসিক নয়, টেকনিকেও ভুলচুক থেকে যাচ্ছে। বল খেলার সময় পায়ের মুভমেন্টেই গলদ। সামনের পায়ের পজিশন ঠিক থাকছে না। ফলে অফস্টাম্পের বাইরের বল না খেলার পণ নিয়ে মাঠে নামলেও শেষপর্যন্ত সেই ফাঁদ এড়াতে পারছেন না বিরাট।
ইরফানের যুক্তি, বিরাটের উচিত ছিল, নিজের ব্যাটিং স্টাইলে পরিবর্তন করে অন্যরকম কিছু চেষ্টা চালানো। তাহলে অজি বোলাররাও বাধ্য হত, বিরাটকে নিয়ে ‘প্ল্যান বি’ নিয়ে মাথা ঘামাতে। অথচ, গোটা সিরিজে তা দেখা যায়নি।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সম্ভবত বিরাটের শেষ টেস্ট ইনিংস। গোটা মাঠ তাকিয়ে ছিল বিরাটের ব্যাট থেকে দারুণ কিছু দেখার অপেক্ষায়। যদিও মাঠে হাজির অনুষ্কা শর্মা সহ ভক্তদের হতাশ করে ফেরা। স্কট বোল্যান্ডের বলে ক্যাচ দেওয়ার পর হতাশা ঝরে পড়ছিল বিরাটের আচরণেও।
সঞ্জয় মঞ্জরেকার মনে করেন, বিরাট নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করেছেন। বদলেছেন ব্যাটিং স্টান্সও। সাধারণ ক্রিজে বাইরে দাঁড়িয়ে খেলতে ভালোবাসেন। কিন্তু এখানে ক্রিজের ভিতরে থাকার চেষ্টা করছিলেন। যাতে বলটা শেষপর্যন্ত দেখে খেলা যায়। কিন্তু ভাগ্য সঙ্গ দেয়নি। কাজে আসেনি কোনও প্রচেষ্টাই।’ নিটফল, পাঁচ টেস্টের শেষে সিরিজে প্রাপ্তি মাত্র ১৯০ রান। ব্যাটিং গড় মাত্র ২৩.৭৫।
এদিকে, দ্বিতীয় দিনে ১৫ উইকেট পড়া সিডনি পিচ নিয়ে এদিনও সমালোচনায় মুখর গাভাসকার। দ্বিচারিতার দাবিও তুললেন। বলেছেন, ‘ভারতে একদিনে ১৫ উইকেট পড়লে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটাররা হইচই বাধিয়ে দিত। গ্লেন ম্যাকগ্রাথকে পর্যন্ত বলতে শুনছি এত ঘাস কখনও দেখেনি। হারলেও পিচ নিয়ে কখনও আমরা প্রশ্ন তুলি না। যে পিচ দেওয়া হয়, মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা থাকে। গতকালই বলেছিলাম, এই পিচ গোরু চরার জন্য ঠিকঠাক। আজও বলছি, এটা মোটেই টেস্ট উপযুক্ত পিচ নয়।’