তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: রাজ্য স্তরের হাঁটা প্রতিযোগিতায় (Walking competition) রেকর্ড গড়লেন জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) পূজা প্রামাণিক (২৩)। অ্যাথলেটিক্স মিটে সিনিয়ার গ্রুপে মাত্র এক ঘণ্টা ৫৫ মিনিটে ২০ কিলোমিটার হেঁটেছেন তিনি। কলকাতায় সল্টলেক স্টেডিয়ামে ৮-১০ অগাস্ট রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতাটি হয়েছে। এতে ১৬ জন অংশগ্রহণ করেন। শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের কোষাধ্যক্ষ শুভাশিস ঘোষ বলেছেন, ‘এই কৃতিত্বের জন্য পূজাকে অভিনন্দন। এর আগে হাইজাম্পে রাজ্য স্তরে রেকর্ড গড়েছিলেন শিলিগুড়ির মধুমিতা পালচৌধুরী।’ পূজার বাড়ি জলপাইগুড়ির পোড়াঝাড়ে। ছোট থেকেই খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহ তাঁর। তবে পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় বারবার সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। তবে জেদ ও অধ্যবসায় পূজাকে আজ এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। ছোটবেলা থেকে পূজার স্বপ্ন ছিল, জেলা-রাজ্য স্তরে খেলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছানোর। তা থেকেই শিলিগুড়ি লাগোয়া কাওয়াখালি মাঠে নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। পূজা জানালেন, ২০২১ সালে জাতীয় স্তরে ২০ কিমি হাঁটা প্রতিযোগিতায় সপ্তম হয়েছিলেন। ২০২২-এ জাতীয় স্তরের ৩৫ কিমি হাঁটা প্রতিযোগিতায় পঞ্চম স্থান অর্জন করেছিলেন তিনি। সে বছরই অক্টোবরে ন্যাশনাল গেমসে হাঁটা প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছিলেন জলপাইগুড়ির এই ক্রীড়াবিদ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১১তম ন্যাশনাল ওপেন রেস ওয়াকিং চ্যাম্পিয়নশিপে ৩৫ কিমি হাঁটায় পঞ্চম হয়েছেন পূজা। তিনি জানালেন, ইতিমধ্যে নয়বার জাতীয় স্তরের হাঁটা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। আর এবার রাজ্য স্তরের হাঁটায় গড়েছেন নতুন রেকর্ড। পূজার কথায়, ‘রাজ্য স্তরে যে রেকর্ড করতে পারব, তা ভাবিনি। তবে যেভাবে অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছে, তাতে ভালো ফলের আশায় ছিলাম। এর আগে রাজ্য স্তরে ২ ঘণ্টা ৯ মিনিটে ২০ কিমি হাঁটার রেকর্ড ছিল। আমি সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছি। এক ঘণ্টা ৫৫ মিনিটে ২০ কিমি হেঁটেছি।’
অলিম্পিকে অংশগ্রহণের স্বপ্ন শক্তিগড় বালিকা বিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনীর। আরও ভালো প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে তিন মাস ধরে বেঙ্গালুরুর একটি কোচিং ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তিনি। কিছুটা আক্ষেপের সুরে পূজা বললেন, ‘রাজ্য সরকারের তরফে ক্রীড়াবিদরা সেরকম আর্থিক সহযোগিতা পান না। যার ফলে অনেক অ্যাথলিট মাঝপথে খেলা ছেড়েও দিয়েছেন। চার বছর আগে বাবার মৃত্যুর পর আমাকেও আর্থিক সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল। সেসব কাটিয়ে উঠে খেলা আজও চালু রেখেছি। এখন যে কোচিং ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি, সেটা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।’ অন্যদিকে, মেয়ের সাফল্যে খুশি মা টুম্পা প্রামাণিক।