কলকাতাঃ চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যে সাধারণত এমনটা হয়ে থাকে! চলচ্চিত্রের সেই চিত্রনাট্য প্রবলভাবে বাস্তব ওয়াশিংটন সুন্দরের জীবনে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে চলতি টেস্ট সিরিজের দলে তিনি ছিলেন না শুরুতে। বেঙ্গালুরু টেস্টে টিম ইন্ডিয়ার হারের পরই ছবিটা বদলে যায়।
ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও কোচ গৌতম গম্ভীরের উদ্যোগে তাঁকে পুনে টেস্টের স্কোয়াডে নেওয়া হয়। চমকপ্রদভাবে তিনি দলের প্রথম একাদশেও ঢুকে পড়েন। আর তারপরই চমক। সুযোগ পেয়েই নিউজিল্যান্ড ইনিংসে ধস নামানোর পাশে সাত উইকেট নেওয়া। পুনে টেস্টের প্রথম দিনের শেষে ওয়াশিংটনই ভারতীয় ক্রিকেটের ‘সুন্দর’। স্বাভাবিকভাবেই প্রথম দিনের খেলার শেষে সাত উইকেট নিয়ে কিউয়ি ইনিংসে ত্রাস সঞ্চার করা ওয়াশিংটন আবেগে ভেসেছেন। কোচ গম্ভীর ও অধিনায়ক রোহিতের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতার কথাও জানিয়েছেন। প্রথম দিনের খেলার শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির হয়ে ওয়াশিংটন বলেছেন, ‘অধিনায়ক ও কোচকে আলাদাভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই। আমি ওঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। চলতি সিরিজের শুরুতে ভারতীয় টেস্ট দলে ছিলাম না আমি। পুনে টেস্টের আগে আমায় সুযোগ দেওয়া হয়। তাই অদ্ভুত একটা অনুভূতি হচ্ছে আজ। যা ভাষায় প্রকাশ করা সহজ নয়। খেলার অবশ্য এখনও অনেক বাকি। কিন্তু আমি দলের স্বার্থে সেরাটা দিতে তৈরি।’
কিংবদন্তি সুনীল গাভাসকার থেকে শুরু করে বহু ক্রিকেট বিশেষজ্ঞই সকালে টসের পর ওয়াশিংটনকে প্রথম একাদশে দেখে অবাক হয়েছিলেন। কেন কুলদীপ যাদব নেই, প্রশ্নও তুলেছিলেন। সবাইকে দিনের শেষে ভুল প্রমাণ করেছেন ওয়াশি (টিম ইন্ডিয়ার অন্দরে ওয়াশিংটন সুন্দরের আদরের নাম)। তাঁর ‘সুন্দর’ স্পিনের জালে কিউয়ি ব্যাটাররা ধরাশায়ী হওয়ার পর ওয়াশিংটন বলেছেন, ‘পরিকল্পনা করেই অভ্রান্ত নিশানায় বল করতে চেয়েছিলাম। সেটাই করেছি। চেষ্টা করেছি, নিজের বোলিং বৈচিত্র্য ধরে রাখার। বাকিটা ঈশ্বরের আশীর্বাদ।’ প্রথম ইনিংসে মোট সাতটি উইকেট পেয়েছেন সুন্দর। যার মধ্যে রয়েছে ভয়ংকর হয়ে ওঠা রাচিন রবীন্দ্রর উইকেটও। কোন উইকেটটা সেরা? প্রশ্ন শেষ হওয়া মাত্র ওয়াশিংটনের জবাব, ‘সাতটি উইকেটের মধ্যে কোনও একটিকে বেছে নেওয়া সহজ নয়। কিন্তু তারপরও বলছি, রাচিনের উইকেটটা পরিস্থিতি অনুযায়ী খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ড্যারিল মিচেলের উইকেটের কথাও বলতে হবে।’ পুনে টেস্টে সাত উইকেট দখলের সঙ্গেই বর্ডার-গাভাসকার ট্রফির স্কোয়াডে ঢুকে পড়ার জোরদার দাবিও তুলেছেন ওয়াশিংটন। ভারতীয় ক্রিকেটের অন্দরের খবর, ওয়াশিংটন অস্ট্রেলিয়া সফরে যাচ্ছেন। কোচ গম্ভীর তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ওয়াশিংটনের। ভারতের সিরিজ জয়ের নেপথ্যে বড় ভূমিকাও ছিল তাঁর। এবারও ওয়াশিংটনকে স্যর ডন ব্র্যাডম্যানের দেশে ‘এক্স’ ফ্যাক্টর হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন গম্ভীর।