রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: কথায় বলে, কারও পৌষমাস, কারও সর্বনাশ। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হতেই মাস্ক আর স্যানিটাইজার নিয়ে যেভাবে কালোবাজারি হয়েছিল, পানীয় জল নিয়েও সেই স্মৃতি ফিরল শহর শিলিগুড়িতে (Siliguri Water Crisis)। এক বোতল জলের জন্য মানুষ হন্যে হয়ে দোকানে ছুটছেন। আর এই সুযোগে দেদার মুনাফা লুটছেন ব্যবসায়ীরা। শুধু তথাকথিত ব্যবসায়ীরাই নন, রাস্তাঘাটে যে কেউ জারে জল ভরে এনে বিক্রি করছে।
অভিযোগ, শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় জল বোতলে ভরে আবার সিল করে রাস্তায় এনে বিক্রি করা হচ্ছে। সেটা আদৌ পরিস্রুত জল কি না তা দেখার কেউ নেই। পানীয় জলের জন্য হন্যে হয়ে ফেরা মানুষ কোনও বাছবিচার না করে সেই জল নিয়েই বাড়ি ফিরছেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে পুরনিগম বা প্রশাসনের এই বিষয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। না রয়েছে জলের দাম নিয়ে নজরদারি, না রয়েছে জলের গুণমান খতিয়ে দেখার নজরদারি। শহরজুড়ে পানীয় জল নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং পর্যন্ত হয়নি। মেয়র গৌতম দেব বলছেন, ‘জল নিয়ে যাতে কালোবাজারি না হয় সেটা দেখার জন্য পুর কমিশনার এবং পুলিশকে বলা হয়েছে।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় জলযন্ত্রণার খবর ভাইরাল হতেই শিলিগুড়িতে (Siliguri)। শুধু জলের কারবারিরাই নয়, পাড়ায় পাড়ায় মুদিখানার দোকানে পর্যন্ত সামনের সারিতে পানীয় জল রেখে বিক্রি হচ্ছে। মর্জিমাফিক দামও নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সুযোগ বুঝে সবাই বাড়তি রোজগার ঘরে তুলতে চাইছেন। অনেক জায়গায় আবার রাস্তার ধারে জলের বোতল নিয়ে বসে রয়েছেন কিছু মানুষ। বোতল দেখে বোঝাই যাচ্ছে, পুরোনো বোতল জোগাড় করে তাতে জল ভরে এনে বিক্রি করা হচ্ছে। সেই জল আদৌ পানের যোগ্য কি না কে বলবে? কিন্তু নিরুপায় মানুষ সেই জলই কিনছেন।
প্রশ্ন উঠছে, পানীয় জল নিয়ে কালোবাজারি (Water Black Marketing) হবে জেনেই নজরদারির জন্য পুরনিগম আগেভাগে বরোভিত্তিক নজরদারি দল তৈরি করে দিল না কেন? যে জল দু’বেলা আসছে সেই জল যাতে কেউ পান না করেন, রান্নার কাজেও ব্যবহার না করা হয় সেটা মাইকে প্রচার করা হল না কেন? শুধু সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা আর সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েই পুরনিগম দায় এড়াল কেন? এর সদুত্তর অবশ্য কেউ দিতে পারেনি।

