উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯ এপ্রিল ছিল ওয়ার্ল্ড ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম দিবস (Irritable Bowel Syndrome)। এটি এমন এক অবস্থা যাতে পেটে অস্বস্তি হয়। এক্ষেত্রে দু’রকম সমস্যা হতে পারে- কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়ারিয়া কিংবা উভয়ই হতে পারে। তবে এই সমস্যার পুরোপুরি কোনও সমাধান নেই। একে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এজন্য রোগীর লক্ষণ অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা দরকার। লিখেছেন জেনারেল ফিজিশিয়ান (ডায়াবিটিস) ডাঃ এস এ মল্লিক
আইবিএস কী
ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা, যেখানে আপনার বৃহৎ অন্ত্রে অনিয়ম ঘটে। এটি কোনও মারাত্মক রোগ না হলেও দৈনন্দিন জীবনে ভীষণ অসুবিধা করতে পারে।
লক্ষণ
পেট ব্যথা বা অস্বস্তি
কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়ারিয়া (দুটোই ঘুরে ঘুরে হতে পারে)
পেটে গ্যাস বা ফাঁপা ভাব
মলত্যাগের পরে আরাম বোধ
অতিরিক্ত গ্যাস
কারণ
আইবিএসের নির্দিষ্ট কারণ এখনও পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে কিছু সাধারণ কারণ হতে পারে –
- মানসিক চাপ বা উদ্বেগ
- হরমোনের ওঠানামা
- খাদ্যতালিকার গণ্ডগোল
- অল্প ঘুম বা বিশ্রামের অভাব
- অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্য ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া উপায়
১. খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি ঃ বেশি মশলা ও ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। লো ফোডম্যাপ ডায়েট
অনুসরণ করুন অর্থাৎ বিশেষ কিছু কার্বোহাইড্রেট এড়ানো দরকার। বেশি করে ফাইবার খান (যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়)। ডায়ারিয়ার ক্ষেত্রে দুধ, কফি ও কৃত্রিম মিষ্টি এড়িয়ে চলুন। ছোট ছোট ভাগে খাবার খান, বেশি খেলে সমস্যা বাড়ে।
২. পর্যাপ্ত জল পান করুন ঃ দিনে অন্তত ২.৫–৩ লিটার জল খান। এছাড়া সুপ, ডাবের জল, ফলের রস সহায়ক।
৩. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন ঃ যোগ, মেডিটেশন বা ব্রিদিং এক্সারসাইজ করুন। দৈনিক ৩০ মিনিট হাঁটা অভ্যাস করুন। মন ভালো রাখুন। পছন্দের গান শুনুন, বই পড়ুন বা কাজ করুন।
৪. ঘুম এবং বিশ্রাম অপরিহার্য ঃ প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার। রাতে দেরি করে খাওয়া বা ঘুমানো এড়িয়ে চলুন।
৫. প্রোবায়োটিক খাবার খান ঃ দই, ঘরে তৈরি আচার ইত্যাদি অন্ত্রে ভালো ব্যাকটিরিয়া বাড়ায়। প্রয়োজনে প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্টও নেওয়া যেতে পারে।
কখন ডাক্তার দেখাবেন
- ওজন হঠাৎ কমে গেলে
- রক্ত মেশানো মলত্যাগ হলে
- অতিরিক্ত দুর্বলতা বা অ্যানিমিয়া হলে
- ঘনঘন বমি হলে
মনে রাখবেন
আইবিএস সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য না হলেও, ঘরোয়া পদ্ধতিতে এটি খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, সঠিক খাবার এবং মানসিক প্রশান্তিই আইবিএসের সবচেয়ে বড় ওষুধ। নিয়ম মেনে চললে আপনি নিশ্চিন্ত জীবনযাপন করতে পারবেন।