সানি সরকার, শিলিগুড়ি: সকালের পর থেকেই মালদার আকাশে মেঘের আনাগোনা। আবার মেঘ সরিয়ে শিলিগুড়িতে ঝলমলে রোদ। কালিম্পংয়ে একযোগে রোদ-মেঘের লুকোচুরি। স্বাভাবিকভাবেই গৌড়বঙ্গে বৃষ্টি শুরু হতে বেশি সময় লাগেনি। বুধবারের মতো লক্ষ্মীবারেও বৃষ্টি হয়েছে হিমালয় সংলগ্ন উত্তরবঙ্গে। সঙ্গে বজ্রপাত এবং ঝোড়ো হাওয়া। ক’দিন আগেও বৃষ্টির জন্য যে আফসোস ছিল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা উধাও। বরং বাঙালির মনে পয়লা বৈশাখ নিয়ে নতুন শঙ্কা জন্ম নিয়েছে। গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই বলছেন, ‘এবছরটাও মনে হয় মাটি হবে বৃষ্টির জলে।’
টানা কয়েকদিন বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও, বাংলা নতুন বছরের প্রথমদিন কোথায়, কতটা বৃষ্টি হবে, তা এখনও নিশ্চিত করেনি আবহাওয়া দপ্তর। তবে উত্তরবঙ্গের (North Bengal Weather Update) প্রতিটি জেলার জন্য আগামী তিনদিন কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহার বক্তব্য, ‘উত্তর-পূর্ব বিহারে বাতাসের উপরিভাগে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। এমন ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে উত্তর বাংলাদেশেও। ফলে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণ জলীয় বাষ্পের জোগান ঘটায় ঝোড়ো হাওয়া এবং বজ্রপাত সহ বৃষ্টি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি বেশ কিছুদিন থাকবে।’
বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে সর্বত্রই। কোথাও রাজপথে পড়বে রাস্তায় আলপনা, কোথাও আবার নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে প্রভাতফেরি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের তোড়জোড় চলছে জেলায় জেলায়। কিন্তু প্রস্তুতির মাঝেই আবহাওয়া নিয়ে (Weather Update) আশঙ্কার মেঘ এসে হাজির। বজ্রপাত সহ বৃষ্টি যে আরও কয়েকদিন চলবে, তা আকাশের মতিগতিতেও স্পষ্ট। তবে পয়লা বৈশাখে বৃষ্টি হবে কি না, হলেও কতটা হবে, তা নির্ভর করছে উত্তর-পূর্ব বিহারের উপর সৃষ্টি ঘূর্ণাবর্তটির স্থায়িত্বের ওপর। তবে তার আগে আগামী তিনদিন যে উত্তরবঙ্গে টানা বৃষ্টি চলবে, সেই পূর্বাভাস দিয়ে এখানকার আটটি জেলার জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবারের পর শুক্র এবং শনিবারও মালদা এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টি হবে এই তিন জেলার দু’-একটি জায়গায়। হাওয়ার গতিবেগ কিছুটা কম থাকলেও উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও যথারীতি বজ্রপাত এবং হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে দফায় দফায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে নজর রেখে আগামী ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা বলেছে আবহাওয়া দপ্তর। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও সতর্কতা জারি করা হয়নি।
পাশাপাশি শুক্রবার ঝড়বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের (South Bengal Weather Update) সব জেলাতেই। বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাস বইবে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ায় সতর্কতা সর্বাধিক। শনিবার দক্ষিণবঙ্গের নয় জেলায় কালবৈশাখীর মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তালিকায় রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া।