উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: চেনাজানা বয়স্ক মানুষের হঠাৎ পড়ে যাওয়ার খবর প্রায়ই শোনা যায়, বিশেষ করে বাথরুমে (Oldage Problem)। একজন বয়স্ক ব্যক্তি পড়ে গেলে বিপদ অনেক। মাথায় আঘাত লেগে রক্তক্ষরণ হতে পারে। ভেঙে যেতে পারে হাত-পা। আঘাত লাগতে পারে শরীরের অন্যান্য অঙ্গেও। তার ওপর বয়স্কদের ভেঙে যাওয়া হাড় সহজে জোড়া লাগতে চায় না। ব্যথাবেদনায় ভুগতে হয় অনেক বেশি। পড়ে গিয়ে আঘাত লাগলে অপরের ওপর নির্ভরশীলতা আরও বেড়ে যায়। শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণার সঙ্গে যোগ হয় আবারও পড়ে যাওয়ার ভয়। এই অবস্থায় যা করবেন –
১) ঘরের ভেতরে যেন যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থা থাকে। রাতে ঘুম ভেঙে বিছানা ছেড়ে এদিক-ওদিক গেলেও যেন বয়স্ক মানুষটা সবকিছু স্পষ্ট দেখতে পান। তাঁর নাগালের মধ্যেই জল রাখুন, যাতে রাতে ঘুম ভাঙলে সহজেই নিজে নিয়ে খেতে পারেন। উঠে কোথাও যেতে না হয়।
২) জল, তেল, অন্যান্য তরল কিংবা পাউডার জাতীয় জিনিস অল্প পরিমাণে মেঝেতে পড়ে থাকলেও কিন্তু বিপদ ঘটতে পারে চোখের নিমেষে। তাই সতর্ক থাকুন।
৩) বাথরুমের মেঝে শুকনো রাখুন। বাথরুমের দেওয়ালে বেশ কিছু হাতল লাগিয়ে নিতে পারেন যাতে কমোড থেকে ওঠার সময় কিংবা পা ধোয়ার পরে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিটি হাতল ধরে ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারেন।
৪) ঘরের কোথাও যেন এমন কিছু পড়ে না থাকে, যাতে বাধা পেয়ে একজন মানুষ পড়ে যেতে পারেন। শিশুর ছোট্ট একটা খেলনার কারণেও কিন্তু বয়স্ক ব্যক্তি টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যেতে পারেন। শোয়া বা বসা অবস্থা থেকে তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে ওঠার জন্য উৎসাহ দিন।
৫) বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি হালকা মাথা ঘোরানোর কথা বললে অবহেলা করবেন না। চোখে সমস্যা থাকলেও তিনি পড়ে যেতে পারেন। বাইরে গেলে কানের সমস্যার কারণেও ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এ ধরনের সমস্যা থাকলে দ্রুত চিকিৎসা করান।
৬) হাঁটার জন্য প্রয়োজনে লাঠি কিংবা ওয়াকারের ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁর সঙ্গে সবসময় কেউ থাকলে অবশ্যই ভালো। বিশেষ করে বাথরুমে যাওয়ার সময় কেউ একজন সঙ্গে থাকা উচিত।
৭) বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য বাথরুমে ছোট্ট টুল রাখতে পারেন। তঁাদের জন্য সঠিক মাপের জুতো ও স্যান্ডেল রাখতে হবে। জুতো-স্যান্ডেলের তলা যেন পিচ্ছিল হয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৮) পায়ের নখ সুন্দরভাবে কেটে দিন। পায়ে ব্যথা, জড়তা, ক্ষত বা অন্য সমস্যা হলে চিকিৎসা করান।
শরীরচর্চাতে উৎসাহ দিন। তবে সেটা যেন হয় বয়স এবং শারীরিক অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
বহুবিধ শারীরিক সমস্যার জন্যই একজন মানুষ পড়ে যেতে পারেন। যেমন ডায়াবিটিস বা রক্তচাপের ওঠানামা, মাথা ঘোরা প্রভৃতি। চিকিৎসকের কাছে গেলে এসব সমস্যা ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। চিকিৎসা করানোও সহজ হয়।