কুশমণ্ডি: মরচে ধরা সিংহদুয়ার। তার সামনে শুকনো খড়ির স্তূপ। ঝরা পাতাও জমেছে। বহুদিনের অব্যবহারের ছবি স্পষ্ট। পাল আমলে তৈরি হয়েছিল কুশমণ্ডির মহীপালদিঘি। তার দক্ষিণ পাড়ে কয়েক বছর আগে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে রিসর্ট তৈরি হয়েছিল। সেই রিসর্ট এখন অন্ধকারে। কতদিন রিসর্ট খোলা হয়নি, বলতে পারেননি রিসর্টের দায়িত্বে থাকা নফিলদ্দিন আহমেদ। মহীপালদিঘির অবস্থাও তথৈবচ।
সদ্য পেরিয়ে আসা সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে পালিত হয়েছে পর্যটন দিবস। পর্যটন ঘিরে রাজ্য সরকার নানা পরিকল্পনা নিয়েছে। অথচ কুশমণ্ডির মহীপালদিঘিকে ঘিরে পর্যটনের পরিকল্পনা এখন অতল জলে। রিসর্ট দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কুশমণ্ডির মার্কেটিং কোঅপারেটিভ সোসাইটিকে। সেই মার্কেটিং কোঅপারেটিভ সোসাইটির কাছ থেকেও একসময় দায়িত্ব নেয় ব্লক তথা জেলা প্রশাসন। পর্যটক টানার উদ্দেশ্যে এক সময় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন থেকে তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছিল। সেই তথ্যচিত্রে দেখানো হয়েছিল কুশমণ্ডির মহীপালদিঘি, মহিষবাথানের মুখোশ শিল্প, হরিরামপুরের শমীবৃক্ষ, গঙ্গারামপুরের বাণগড়, তপনদিঘি থেকে জেলার একাধিক ইতিহাস বিজড়িত জায়গার ছবি ও সংস্কৃতির নানা আঙ্গিক। সেসবে এখন ধুলো জমে রয়েছে।
পর্যটন ও পরিবেশকর্মী তুহিনশুভ্র মণ্ডলের আক্ষেপ, ‘ঢাকঢোল পিটিয়ে জেলায় বহু কিছুই চালু হয়। আর ধরে রাখা হয় না। এটা আমাদের জেলাবাসীর দুর্ভাগ্য।’ জেলার ইতিহাস গবেষক সমিত ঘোষের বক্তব্য, ‘বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা মহীপাল রিসর্ট অস্বাভাবিক কিছু নয়। কারণ সদিচ্ছার অভাব।
বর্তমানে অফিস বন্ধ থাকায় প্রশাসনের কোনও আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।’ শীতের আবহ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। এই সময় বহু পর্যটক জেলায় ঘুরতে আসেন। থাকেন শহরের হোটেলগুলিতে। তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে থাকে মহীপালদিঘির পাড়ে সরকারের লক্ষ টাকা খরচে তৈরি করা রিসর্ট। অফিস খুললে মহীপাল রিসর্ট নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মরিয়ম মার্ডি। বন্ধ রিসর্টের দিকে তাকিয়ে দিঘিপাড়ের বাসিন্দাদের একটাই প্রশ্ন, কবে খুলবে মহীপাল রিসর্ট? উত্তরদাতাদের নীরবতা আরও অন্ধকারে ঠেলে দেয় রিসর্টের ভবিষ্যৎ।