কোচবিহার ও কামাখ্যাগুড়ি: বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনায় ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তরের সহযোগিতায় ৭ এপ্রিল থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত মালদায় নবম নেতাজি সুভাষ স্টেট গেম অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাতে কোচবিহার (Cooch Behar) ও আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলার প্রতিযোগীরা নজর কেড়েছেন উশুতে (Wushu)। তাতে ছয়টি সোনা, তিনটি রুপো ও পাঁচটি ব্রোঞ্জ পেয়েছেন কোচবিহারের প্রতিযোগীরা। আর দারিদ্র্য যে কখনও সাফল্যের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে না, সেটা প্রমাণ করে দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের রোহিত সরকার। কুমারগ্রাম ব্লকের কামাখ্যাগুড়ির বাসিন্দা রোহিত ৮০ কেজি বিভাগে রৌপ্য পদক পেয়েছেন।
সোনা জিতেছেন কোচবিহারের উমেশ বর্মন (৫২ কেজি), রিয়া পারভিন (৫৬ কেজি), হানিফা খাতুন (৬০ কেজি), উমর ফাহরুখ হোসেন (৬৫ কেজি), প্রশান্ত বর্মন (অপশনাল) ও বাপ্পি রায় (কুং-ফু)। আর রুপো পেয়েছেন কোচবিহারের রিতুন হোসেন (৭৫ কেজি), শর্মিষ্ঠা বর্মন (অপশনাল) ও নন্দিনী দাস (চ্যাংকুয়ান)। ব্রোঞ্জ পেয়েছেন কোচবিহারের কোয়েল বর্মন (৪৫ কেজি), বর্ণালি বর্মন (৫২ কেজি), তন্ময় রায় (চ্যাংকুয়ান), বিশ্বজিৎ রায় (নানকুয়ান) ও অনুরাধা সরকার (নানকুয়ান)। প্রতিযোগীদের সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কোচ ও ম্যানেজার যথাক্রমে মৃণাল রায় ও অভিজিৎ বর্মন। কোচবিহার জেলা উশু সংস্থার সভাপতি সত্যেন বর্মনের কথা, ‘কোচবিহার জেলা থেকে ২০ জন অংশ নিয়েছে। তার মধ্যে ১৪ জনই পদক জেতায় আমরা খুশি।’
এদিকে, কামাখ্যাগুড়ির রোহিত সদ্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। তার কথায়, ‘ক্রিকেট, ফুটবল, হ্যান্ডবল ও ভলিবল খেলার প্রতি যতটা নজর রয়েছে, উশু খেলার প্রতি সেভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় না। কামাখ্যাগুড়িতে ক্রীড়া পরিকাঠামোর যথেষ্ট অভাব রয়েছে। উশুর জন্য খেলার মাঠ থাকলে সুবিধা হত। সরকারি সুযোগসুবিধা না পেলে কতদিন এভাবে খেলা চালিয়ে যেতে পারব, তা জানি না।’
১১ মাস আগে রোহিতের বাবা সঞ্জিত সরকার প্রয়াত হয়েছেন। সঞ্জিতের একটি ছোট প্রসাধনীর দোকান ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর সংসারে অভাব দেখা দেয়। রোহিতের মা পার্বতী রায় সরকারের কথায়, ‘ছেলে ওর বাবার স্বপ্নগুলো পূরণ করছে। সরকারি সাহায্য না পেলে কতদিন খেলা চালিয়ে যেতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’ রোহিতের প্রশিক্ষক উৎপল রায় তার আরও সাফল্য কামনা করেছেন।