অভিরূপ দে, ময়নাগুড়ি: দু’বছর পর ফের জল্পেশ(Jalpesh) মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করে শিবলিঙ্গে পুণ্যার্থীরা জল ঢালতে পারবেন। আদালতের নির্দেশে গত দুই বছর শ্রাবণীমেলার সময় জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করে ভক্তরা পুজো দিতে পারেননি। জল্পেশ মন্দির ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক গিরিন্দ্রনাথ দেব বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এবার জল্পেশ মন্দিরের ভেতর পুণ্যার্থীদের প্রবেশের জন্য কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক যন্ত্র লাগানো হয়েছে। মন্দিরের বাইরে একাধিক জোন তৈরি করা হচ্ছে। সেই জোন থেকে অত্যাধুনিক যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ৫০ জন করে পুণ্যার্থীকে মন্দিরে ঢোকানো হবে। ৫০ জন মন্দিরে প্রবেশের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে গেট বন্ধ হয়ে যাবে।’
২০২২ সালের শ্রাবণীমেলার সময় অত্যধিক ভিড়ের চাপে জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে গিয়ে এক পুণ্যার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেসময় তিনি আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তখন পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আদালত জল্পেশ মন্দিরের ভেতর প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বদলে মন্দিরের বাইরে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল ঢালার ব্যবস্থা হয়। ২০২৩ সালেও একইভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। পরে জল্পেশ মন্দির কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করে। তখন হাইকোর্টের তরফে কিছু শর্তসাপেক্ষে শ্রাবণীমেলার সময় মন্দিরের ভেতর পুণ্যার্থীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশ মেনে মন্দির কমিটির তরফে এবার বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ এবছর ২১ জুলাই গুরু পূর্ণিমার দিন থেকে জল্পেশে শ্রাবণীমেলা শুরু হচ্ছে। এছাড়াও ভিড় এড়াতে গেটের বাইরে আলাদা কনটেনমেন্ট জোন থাকছে। মন্দিরে প্রবেশের আগে ১০০ ভক্ত সেই জোনে অপেক্ষা করবেন।
শুধু তাই নয়, প্রায় ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। ৫০০ ভলান্টিয়ার মন্দিরের ভেতরে ও বাইরে থাকবেন। কুইক রেসপন্স টিম, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিমও সেখানে থাকবে। মেলা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। আরও বেশ কয়েক দফায় বৈঠক হবে বলে খবর। দু’বছর বাদে জল্পেশ মন্দিরের ভেতর প্রবেশ করতে পারার খবরে খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বাপি মণ্ডল নামে এক স্থানীয় ব্যবসায়ীর বক্তব্য, ‘মন্দিরে প্রবেশ বন্ধ থাকার জন্য ভক্তদের মধ্যে কিছুটা উৎসাহ কমেছিল। ফলে তাঁদের সংখ্যাও কমেছিল। এবার হয়তো ভালো ব্যবসা হবে।’