উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিফলে গেল চাঁদ ছোয়ার স্বপ্ন। রবিবার চাঁদের মাটিতে ভেঙে পড়ল রাশিয়ার চন্দ্রযান লুনা-২৫। ভেস্তে গেল ১৩ বছরের সাধনা। এখন ভরসা ভারতের চন্দ্রযান-৩। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান বিক্রমের নামার কথা ২৩ অগাস্ট বিকেলে। সোমবার এই দক্ষিণ মেরুতেই অবতরণের কথা ছিল লুনা-২৫এর। এই প্রকল্প ভেস্তে যাওয়ায় কতটা ক্ষতি হল রাশিয়ার?
জানা গিয়েছে, চাঁদের অ-দেখা দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল রাশিয়া। টানা ১৩ বছর ধরে সাধনার পর চাঁদের উদ্দেশ্যে লুনা-২৫কে পাঠায় রাশিয়া সরকার। এরজন্য খরচ হয় ভারতীয় মুদ্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। মাত্র ১২ দিনেই রাশিয়ার চন্দ্রযানটির চাঁদের মাটি ছোয়ার কথা ছিল। কিন্তু চাঁদের খুব কাছে গিয়েও প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে আছড়ে পরে চাঁদের মাটিতে। লুনা-২৫এর অবতরণ সফল হলে চাঁদের মাটিতে ভারতের চন্দ্রযান-৩কে টেক্কা দিতে পারত রাশিয়া। কিন্তু তা আর হল না। ভারতের চন্দ্রযান চাঁদের ভূমি থেকে মাত্র ২৪ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। বর্তমানে খুবই ধীর গতিতে পাক খাচ্ছে বিক্রম। বর্তমানে বিক্রমের ওপর আর নিয়ন্ত্রণ নেই ইসরোর। কোনও কারণে ল্যান্ডিং-এ বিলম্ব হয়, সেক্ষেত্রেও বিক্রমে অতিরিক্ত জ্বালানী ভরা রয়েছে।
৪৭ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৭৬ সালে চাঁদ ছোঁয়ার চেষ্টা করেছিল অবিভক্ত সোভিয়েত রাশিয়া। লুনা-২৪ চাঁদে নেমে চাঁদের মাটির নমুনা সংগ্রহ করে এনেছিল। এক সময় মহাকাশ গবেষণার শীর্ষে ছিল সোভিয়েত রাশিয়া। আমেরিকাও পিছিয়ে ছিলনা, বরং দুই দেশের লড়াই হত সেয়ানে সেয়ানে। আশির দশকেই সোভিয়েত রাশিয়া মহাকাশে প্রথম মহাকাশচারী পাঠানো থেকে শুরু করে চাঁদে প্রথম অভিযাত্রী যান নামায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার অর্থনীতির হাল অত্যন্ত খারাপ। তার উপর লুনা-২৫ চন্দ্রাভিযানের জন্য দেশের কোষাগার থেকে খরচ হয়ছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা খরচ অর্থনৈতিকভাবে আরও ক্ষতি হয়েছে রাশিয়ার। বিশেষজ্ঞরা এ-ও বলছেন, রাশিয়ার খরচ করা ওই বিপুল অর্থ জলেই গেল। যা যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে যাওয়া একটি দেশের পক্ষে নিঃসন্দেহে হাঁটু দুর্বল করে দেওয়ার মতো। সেই ক্ষতিই বা সামাল দেওয়া যাবে কী করে, তা নিয়ে চিন্তায় পুতিন সরকার! এছাড়াও মহাকাশে আমেরিকা, চিন, ভারতকে টেক্কা দিতে গিয়ে কিছুটা হলেও মুখ পুড়ল পুতিনের দেশের, মানছেন অনেকেই!