মালবাজার: সোনালি চা বাগানের পর এবার তালা ঝুলল সাইলি চা বাগানে। শ্রমিক অসন্তোষের জেরে সোমবার থেকে সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক নোটিশ জারি করল সাইলি চা বাগান কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনিক স্তরে নোটিশ পাঠিয়ে বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন মালিকপক্ষ। মালবাজারের অ্যাসিস্ট্যান্ট লেবার কমিশনার প্রণব কুমার দাস বলেন, সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক জারি হচ্ছে বলে সাইলি চা বাগান কর্তৃপক্ষের নোটিশ পেয়েছি। ফলে বিপাকে পড়লেন বাগানের ১৪৬০ জন শ্রমিক। বিষয়টি নিয়ে সমস্ত মহলের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। মোবাইল সুইচ অফ থাকায় ঘটনা প্রসঙ্গে বাগানের ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
জানা গিয়েছে, শ্রমিকদের পাক্ষিক বেতন প্রদানকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার থেকেই ডুয়ার্সের এই চা বাগানের পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হয়ে ওঠে। গত ২২ জানুয়ারি বাগানে একটি পাক্ষিক মজুরি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। মজুরি প্রদানের দাবিতে বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা কারখানার গেটের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন। দিনভর টানাপোড়নের পর অবশেষে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ম্যানেজার তার কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সুযোগ পান। শুক্রবার ফের আন্দোলন শুরু হলে বাগান কর্তৃপক্ষ ২২ জানুয়ারির বকেয়া পাক্ষিক মজুরি ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দেয়। ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আরও একটি পাক্ষিক মজুরি প্রদানের কথাও বলা হয়।
মালিকপক্ষের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সোমবার শ্রমিকদের পাক্ষিক মজুরি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই রবিবার সন্ধ্যায় সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ জারি হওয়ায় গোটা বিষয়টিতেই অনিশ্চয়তার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। নোটিশে সাইলি চা বাগানের জেনারেল ম্যানেজার জানিয়েছেন, বাগানের আর্থিক পরিস্থিতি ভালো নয়। শ্রমিকদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল। তবুও দফায় দফায় কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন করা হচ্ছে। বাগানের শান্তিশৃঙ্খলা জনিত পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। আর তারই জেরে এই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে বলেই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
শ্রমিকপক্ষ অবশ্য এই দাবি মানতে নারাজ। শ্রমিকদের দাবি, নিয়ম মেনেই তারা বাগানের যাবতীয় কাজ করেন। অথচ শ্রমিকদের মজুরি সহ নানা ক্ষেত্রে বঞ্চনা করা হয়। বাগান বন্ধের বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মাল গ্রামীণ ব্লক সভাপতি সুশীল কুমার প্রসাদ বলেন, বাগান বন্ধের বিষয়টি সমীচীন নয়। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে।