চাঁচল: শ্বশুরবাড়িতে পালিয়েও শেষ রক্ষা হল না সর্দারের। বড়দিনের সন্ধ্যায় চাঁচলের সোনার দোকানে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের হাতে পূর্ব মেদিনীপুরের পাশকুড়া থেকে গ্রেপ্তার ২। ধৃতদের নাম জাহাঙ্গীর আলম(৪৮) ওরফে সর্দার এবং গুলতন শেখ(৪৫)। জাহাঙ্গীর ইংরেজবাজার থানার মিল্কি এলাকার বাসিন্দা। গুলতন বিহারের কাটিহার থানা এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুইজন চাঁচলের ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত। ডাকাতির অন্যতম মাস্টারমাইন্ড সর্দার। আর ডাকাতদলের বোমমাস্টার গুলতন।দুজনই বাংলা এবং বিহার পুলিশের খাতায় মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল। ডাকাতি, খুন সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে বাংলা বিহারের বিভিন্ন থানার পুলিশ খুঁজছে এই দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে। এমনকি কয়েক মাস আগে চাঁচল থানার মালতিপুরেও সোনার দোকানে ডাকাতি এবং সিভিক খুনের ঘটনায় এই দু’জন যুক্ত রয়েছে। বৃহস্পতিবার ধৃত দুজনকে ১৪ দিনের পুলিশি হেপাজতের আবেদন জানিয়ে চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ।
এই ডাকাতির ঘটনার ঝাড়খন্ড থেকে গানম্যান দীপক দাসের গ্রেপ্তারের পরেই অগ্রগতি পায় তদন্ত। স্পষ্ট হয় লালু সাহানি গ্যাংয়ের যোগ। দীপককে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে উঠে আসে এই দুই দুষ্কৃতীর নাম। তারপর থেকেই সর্দার এবং তার সহযোগীর খোঁজে ময়দানে নামে বিশেষ তদন্তকারী দল। সূত্র মারফৎ খবর মেলে মালদার সর্দার পাশকুড়াতে শ্বশুরবাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছে। তার ডেরাতেই রয়েছে গুলতনও। গত মঙ্গলবার স্থানীয় থানার সহযোগিতায় পাশকুড়াতে যায় বিশেষ তদন্তকারী দলের প্রতিনিধিরা। সারাদিন ছদ্মবেশে রেকি করে এলাকায়।তারপর বুধবার ভোর রাতে পুলিশের জালে আসে এই দুই দুষ্কৃতী। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই দুই ধৃত সোনার দোকানের ভেতরে ছিল না। ডাকাতির সময় দোকানের বাইরে মানুষের ভিড়ে মিশেছিল এরা। বড়দিনের সন্ধ্যায় চাঁচলের স্টেডিয়াম মাঠেই বোম বেঁধেছিল গুলতন। ডাকাতির পর ডাকাতদল একাধিকবার নিজেদের জায়গা পরিবর্তন করে। ওই রাতে ডাকাতদল উত্তর দিনাজপুর শিলিগুড়ি হয়ে নেপালে চলে যায়। তারপরেই পৃথকভাবে যে যার মত স্থান পরিবর্তন করে।
পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘তদন্ত যথেষ্ট অগ্রগতি পেয়েছে। লালু সাহানি গ্যাং বাংলায় যে ডাকাতিগুলো করে তার মাস্টার মাইন্ড এই সর্দার। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করে খোয়া যাওয়া গয়না উদ্ধার করা যাবে।’