উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ গত ১২ নভেম্বর ব্রহ্মকাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের একটি নির্মানাধীন টানেলে ধসে আটকে আছেন চল্লিশ জনেরও বেশি শ্রমিক। ধ্বংসস্তূপের ওপার থেকে তাঁদের এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ৭২ ঘন্টার ওপরে আটকে থাকার কারণে ধীরে ধীরে তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। পাইপের সাহায্যে আটকে থাকা শ্রমিকদের খাবার, ওষুধ, অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, শ্রমিকরা ধ্বংসস্তূপের ওপারে প্রায় ১ কিমি এলাকায় ঘোরাফেরা করতে পারছেন। এছাড়া সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগও আছে।
চিকিৎসক ডঃ বিএস পোকরিয়াল বলেন, ‘ধ্বংসস্তূপের ওপাশে থাকা শ্রমিকরা ধীরে ধীরে অসুস্থবোধ করতে শুরু করেছেন। অনেকেই বমি করছেন। মাথা ব্যথায় চোখ খুলে রাখতে পারছেন না। তাঁদের মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট পাঠিয়েছি পাইপ দিয়ে। তবে আমরা ওআরএস পাউচ পাঠাতে পারিনি। আমাদের আশঙ্কা, ওআরএস পাউচ সেই পাইপে আটকে যেতে পারে। এই একমাত্র পাইপ দিয়েই জল ও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে।’
উত্তরকাশির মুখ্য মেডিক্যাল অফিসার ডঃ আরসিএস পানওয়ার বলেন, ‘টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ার কারণে অসুস্থতা বাড়ছে। অনেকেরই গ্যাস্ট্রাইটিস দেখা দিয়েছে। তবে তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সামগ্রী পাঠানোর কাজ ধারাবাহিকভাবে চলছে। ৭০০০ লিটার ধারণ ক্ষমতার প্রায় ২৫-৩০টি বড় আকারের অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে টানেলে অক্সিজেন সরবরাহের কাজে আসবে সেগুলি।’
উল্লেখ্য, সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটি তৈরি হচ্ছিল সিল্কইয়ারা এবং দন্ডলগাওঁয়ের মাঝে। রবিবার ভোর চারটে নাগাদ সেই টানেলে ১৫০ মিটার লম্বা এলাকা জুড়ে ধস নামে। এই সড়কটি তৈরি হলে উত্তরকাশি এবং যমুনোত্রীর মধ্যে যারাপথ ২৬ কিলোমিটার কমে আসবে। জানা যায়, ধসের খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান উত্তরকাশির পুলিশ। পুলিশ সুপার অর্পণ যদুবংশীর তদারকিতেই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দমকল। এদিকে ধ্বংসস্তূপের থেকে একটি বড় স্ল্যাব সরাতে সক্ষম হয়েছে উদ্ধারকারী দল। সেখানেই ভগ্নাবশেষের মধ্যে দিয়ে ৯০০ মিলিমিটারের পাইপ ঢোকানো হয়। সেই পাইপ দিয়েই যাবতীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে আটকে পড়া শ্রমিকদের।