রাজু সাহা, শামুকতলা: কথায় আছে ভালোবাসা অন্ধ। সেই ভালোবাসার টানে স্বামী-সন্তান ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধলেন এক বধূ। আর বধূর খোঁজে পুলিশ নিয়ে হরিয়ানা থেকে কুমারগ্রামে এলেন স্বামী। যদিও স্বামীর কাছে আর ফিরতে নারাজ ওই বধূ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুমারগ্রামের একটি এলাকার বাসিন্দা ওই বধূ হরিয়ানায় কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে পরমিন্দর সিং নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পরে দুজন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের ১০ বছরের সংসার। তাঁদের সন্তানও রয়েছে। হরিয়ানায় কুমারগ্রামের তেলিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এক তরুণের সঙ্গে পরে ওই বধূর পরিচয় হয়। তরুণও হরিয়ানায় কাজ করতে গিয়েছিলেন। ক্রমে তাঁদের সম্পর্ক গভীর হয়। ওই তরুণ বধূকে নিয়ে পালিয়ে কুমারগ্রামের তেলিপাড়া গ্রামে নিজের বাড়িতে চলে আসেন।
শনিবার ওই বধূর খোঁজে কুমারগ্রামে আসে হরিয়ানা পুলিশের একটি দল। বধূর স্বামী পরমিন্দর সিং তাঁর স্ত্রীর নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন হরিয়ানার থানায়। পুলিশ তদন্ত নেমে জানতে পারে ওই বধূ কুমারগ্রাম থানা এলাকায় রয়েছেন। এরপরেই হরিয়ানার পুলিশ কুমারগ্রাম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এদিন কামাখ্যাগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশের সাহায্য নিয়ে ওই বধূর খোঁজে তেলিপাড়া গ্রামে যায় পুলিশের একটি দল। পুলিশ জানতে পারে তেলিপাড়া এলাকার এক তরুণের প্রেমে পড়ে ৮ বছরের ছেলেকে রেখে পালিয়ে এসেছিলেন ওই বধূ। সন্তানকে নিয়ে এদিন হরিয়ানা পুলিশের সঙ্গে আসেন ওই বধূর স্বামীও। তিনি স্ত্রীকে বারবারই অনুরোধ করেন, তাঁর সঙ্গে ফিরে যাওয়ার। কিন্তু বধূ তাঁর প্রেমিককে ছেড়ে কোনওভাবেই যেতে রাজি হননি। তাঁর কথায়, ‘কোনওভাবেই হরিয়ানায় স্বামীর ঘরে ফিরব না। প্রেমিকের সঙ্গেই থাকব।’ ছেলেটি তার মায়ের সঙ্গে থাকার জন্য কান্নাকাটি করছিল। বধূও ছেলেকে কোলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু স্বামী পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তাঁর সঙ্গে না ফিরলে ছেলেকে দেবেন না। এরপর হরিয়ানার পুলিশ এবং বধূর স্বামী সন্তানকে নিয়ে হরিয়ানার উদ্দেশে রওনা হন।
বধূ বলেন, ‘স্বামীর সংসারে থেকে আমি কোনও মূল্য পেতাম না। আমার প্রেমিক আমাকে দারুণ ভালোবাসে। তাই ভালোবাসার জন্য আমি স্বামীকে ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে এসেছি। আমি আর পুরোনো সংসারে ফিরতে চাই না। কিন্তু আমার ছেলের প্রতি আমার অধিকার আছে। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার জন্য আমি যা করার করব।’
বধূর স্বামী পরমিন্দর সিং বলেন, ‘আমার স্ত্রী হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যায়। স্ত্রী মিথ্যা কথা বলছে। খুব যত্নে ওকে রেখেছিলাম। ওকে নিয়ে যেতে এসেছিলাম। কিন্তু ফিরল না। আমার ছেলে আমার সঙ্গেই থাকবে।’
এ ব্যাপারে কামাখ্যাগুড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এক আধিকারিক জানান, বধূ তাঁদের সঙ্গে ফিরতে রাজি হননি। পুলিশ এবং ওই বধূর স্বামী হরিয়ানা ফিরে গিয়েছেন।