উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ দীর্ঘ ৪০ বছর কোনও পর্বতারোহীর পা পড়েনি কাশ্মীরের ব্রহ্মা ১ শৃঙ্গে। সেই শৃঙ্গে এতদিন বাদে পা রাখলেন বাংলার ১৫ জনের একটি পর্বতারোহী দল। যার নেতৃত্ব দেন সোনারপুরের রুদ্রপ্রসাদ হালদার। এই প্রথম কোনও ভারতীয় দল এই অভিযান সফল করল। প্রথমবার, ১৯৭৩ সালে ইংলন্ডের ক্রিস বনিংটন এই শৃঙ্গে আরোহণ করে। তারপর ১৯৭৮ সালে ইংলন্ডের একটি পর্বতারোহী দল আরোহণ করে। ১৯৭৯ সালে জাপানের একটি পর্বতারোহী দল আরোহণ করে এই শৃঙ্গ। তারপর থেকে ছয় হাজার মিটার উচ্চতার এই শৃঙ্গে আর কেউ উঠতে পারেনি।
জানা গিয়েছে, গত ২৭ জুন সোনারপুর আরোহীর সদস্য রুদ্রপ্রসাদ হালদারের নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি দল অভিযান শুরু করে কাশ্মীরের ব্রহ্মা ১ শৃঙ্গের উদ্দেশে (৬৪১৬ মিটার)। দ্বিতীয় দলটি যায় ৩০ জুন। ১৮ জুলাই রাত্রি ১১টা নাগাদ ৫ জন শেরপা ও ৯ জনের দল সামিটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরদিন সকাল সাড়ে দশটার আশেপাশে সামিট করে তারা। শৃঙ্গের ঠিক কাছে পৌঁছেই বিপত্তি ঘটে। বাকি ছিল মাত্র ১৩৬ মিটার। তখনই ছন্দপতন। সামিটের রুট খুলতে গিয়ে ৭০ মিটার নীচে পড়ে গেলেন ওই দলের সঙ্গে থাকা এক শেরপা। তাই ব্রহ্মার স্বপ্নকে অধরা রেখেই ক্যাম্প ২-তে ফিরেছেন আরোহীরা।
কাশ্মীরের কিস্তওয়াড় জেলার এই বিপজ্জনক ও কঠিন শৃঙ্গে অভিযান প্রসঙ্গে রুদ্রপ্রসাদ হালদার জানান, “শনিবার রাত ১২টা নাগাদ অল্প তুষারপাতের মধ্যেই সামিট-যাত্রা শুরু হয়। ভোর ৫টায় ৬১৫৬ মিটার উচ্চতায় পৌঁছে যান রুদ্রপ্রসাদ ও তাঁর ৮ সঙ্গী সপ্তশৃঙ্গজয়ী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত, পার্থসারথি লায়েক, অভীক মণ্ডল, রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী, দেবাশিস মজুমদার, নৈতিক হালদার, উদ্দীপন হালদার ও তুহিন ভট্টাচার্য। কিন্তু হোয়াইট আউটের মধ্যে দেখতে না পেয়ে তেনজিং শেরপা ৭০ মিটার নীচে পড়ে যান। তিন শেরপা তাঁকে উদ্ধার করে ক্যাম্প ২-তে নামান। রাত্রি ১১টা নাগাদ ফের দলটি ব্রহ্মা ১ শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করে। স্বপ্ন জয়ের এত কাছে এসে ফিরে আসতে রাজি ছিলেন না কেউই। শুরু হয় ফের যাত্রা। অবশেষে স্বপ্ন সফল। কাশ্মীরের কিস্তওয়াড় জেলার ব্রহ্মা ১ শৃঙ্গ দীর্ঘদিন ধরেই ভারতবাসীর কাছে অধরা ছিল। ১৯৭৩ সালে ব্রিটিশ পর্বতারোহী স্যর ক্রিস বনিংটন এই শৃঙ্গে প্রথম আরোহণ করেন। তার পর থেকে একাধিক অভিযানই ব্যর্থ।