চাঁচল: চলতি মাসের ৩ তারিখ ‘তৃণমূলের নব জোয়ার’ কর্মসূচির জন্য চাঁচলে এসেছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চাঁচল স্টেডিয়ামের মাঠে রাত্রিযাপন করেন তিনি। এই মাঠেই উত্তর মালদার ৯টি ব্লকের ৮৭টি অঞ্চলের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য তৃণমূলের গোপন ব্যালটে ভোট হয়। বহু তৃণমূল কর্মী বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন ভোট দিতে। সারা মাঠ জুড়ে খাটানো হয়েছিল তাবু। মাঠের মাঝখানে বাঁধা হয়েছিল মঞ্চ। কার্যত এলাহী আয়োজন। কিন্তু অভিষেকের কর্মসূচির ছয়দিন হয়ে গেলেও সংস্কার হয়নি মাঠের। সারা মাঠজুড়ে ছোট-বড় গর্ত। যা দেখলে মাঠ না চাষের জমি চেনা দায়। মাঠের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে রয়েছে পেরেক, তার। মাঠের বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনার স্তূপ। আর এই নিয়ে ক্ষোভ জমেছে চাঁচলের ক্রীড়াপ্রেমী এবং খেলোয়াড়দের মধ্যে। দ্রুত মাঠ সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
স্থানীয় যুবক ফিরদৌস আলম বলেন, ‘মাঠের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে রয়েছে। শহরের এই মাঠেই সব খেলাধূলা হয়। অনেকে শরীরচর্চা করতে আসেন। আমরা খেলাধূলা করতে পারছি না।’ সোয়েল আলী বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা খরচ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠান হল। কিন্তু তারপর আর মাঠ সংস্কার করার চিন্তা নেই প্রশাসনের।’
এবিষয়ে চাঁচল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষক রাজেশ দাস জানান, তিনি ঠিকমতো অনুশীলন করাতে পারছেন না। যে কোনও সময় গর্তে পা পড়ে আঘাত লাগতে পারে। মাঠের একদিকের দরজা ভেঙে যাওয়ার ফলে যখন-তখন গাড়ি এবং বাইক মাঠের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিনীত আবেদন প্রশাসন যাতে এই মাঠকে সংস্কার করে ব্যবহারযোগ্য করে তোলে।’ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, মাঠ খেলার জন্য না রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য?
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা প্রসেনজিৎ শর্মার দাবি, এইভাবে সরকারের সম্পত্তিকে নষ্ট করছে তৃণমূল। রাজনৈতিক কর্মসূচি শেষ, তারপর আর কোনও মাথা ব্যাথা নেই। কারণ মানুষের জন্য এরা একবারও ভাবেনা।
যদিও মাঠ দ্রুত ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই প্রসঙ্গে চাঁচল ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আফসার আলি জানান, এখনও পর্যন্ত সমস্ত কাঠামো খোলা হয়নি। খোলা হলেই সংস্কার করে দেওয়া হবে মাঠ। এটা নিয়ে রাজনীতির কিছু নেই। এ বিষয়ে চাঁচল মহকুমা শাসক কল্লোল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।