কিশনগঞ্জঃ ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় গ্রহীতাকে পুড়িয়ে মারল ঋণদাতারা। এমনই ঘটনা ঘটেছে বিহারের কাটিহারের বারসই এলাকার বঘবা গ্রামে। মৃত ব্যাক্তির নাম হাফিজ মহম্মদ গালিব ওরফে মহম্মদ জলিল। তিনি মহাজনের কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা ঋন নিয়ে পরিশোধ করতে পারেননি। ঋণের টাকা ফেরত না পেয়ে রবিবার রাতে মহম্মদ জলিলকে কেরোসিন তেল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে ঋণদাতা ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, মাস খানেক আগে মহাজন নবেদের থেকে ৮০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন মহম্মদ জলিল। পেশায় মাদ্রাসা শিক্ষক জলিল ঋণের টাকা গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋণ দেন সুদে। সময়মতো সেই টাকা ব্যবসায়ীদের থেকে আদায় করতে না পারায় জলিল কথামতো নবেদকেও ঋণ নেওয়া টাকা ফেরাতে পারেননি তিনি। ফলে টাকার জন্য ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করতে থাকে নবেদ জলিলের ওপর। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রায় ২০ দিন আগে বলরামপুর গ্রামের কাছে বিষয়টি নিয়ে বিবাদ বাধে দুজনের। পরে ১৫ দিনের মধ্যে জলিল টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে দুজনের বিবাদ মেটে।
এই ঘটনার পর ২০দিন পেড়িয়ে যাওয়ার পরও টাকা ফেরত না পেয়ে রবিবার রাতে জলিলের বাড়িতে দলদল নিয়ে হানা দেয় মহাজন নবেদ। সেই সময় জলিলকে ব্যপক মারধর করার পাশাপাশি তারা কেরোসিন তেল ঢেলে জলিলের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তাঁর দেহে দাও দাও করে জ্বলতে থাকে আগুন। বাঁচার তাগিদে আগুন সে সেই অবস্থাতেই বাড়ির বাইরে বেড়িয়ে চিৎকার করতে থাকেন। স্থানীয়রা কোনওভাবে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় কাটিহার সদর হাসপাতালে। সেখানে জলিলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রেফার করা হয় ভাগলপুর মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতালে। মেডিক্যাল কলেযে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর মৃত্যুর পর দেহটি উদ্ধার করে মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কাটিহার সদর হাসপাতালে পাঠায় বলিয়া বেলন থানার পুলিশ।
এই ঘটনায় মৃতের স্ত্রী পাকিজা খাতুন জানান, ওনার স্বামী একটি বেসরকারি মাদ্রাসা চালাতেন। পাশাপাশি মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সুদের কারবারী করতেন। কিন্তু মহাজনের কাছ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে না পারায় রবিবার রাতে মহাজন দলবল নিয়ে বাড়িতে ঢুকে বেদম মারধোর করে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তাতেই দ্বগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় স্বামীর। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠোর সাজার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বলিয়া বেলন থানার ওসি রবীন্দ্র কুমার জানান, পুলিশ নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দুইজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হলেও মূল অভিযুক্ত নবেদ সহ অন্যান্যরা পলাতক। অভিযুক্তদের খোঁজে চিরুনী তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।