চাঁচলঃ নির্ধারিত সময়ে ঢুকছে না বেতন। সঙ্গে বেশ কয়েক মাস ধরে বেতনের অংশ থেকে কেটে নেওয়া হচ্ছে টাকা। একাধিক সমস্যায় জর্জরিত চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অস্থায়ী সাফাই কর্মীরা। বেতন কাটার প্রতিবাদ করতে গেলে এক সাফাইকর্মীকে বরখাস্ত করা হয় বলে অভিযোগ হাসপাতাল সহকারী সুপারের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সমস্যা সমাধানের দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সাফাই কর্মীরা। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে এই বিক্ষোভ। সাফাই কর্মীদের কর্ম বিরতি ও বিক্ষোভের জেরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। ব্যহত হয়েছে সাফাই পরিষেবা।
জানা গিয়েছে, মালদার চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সাফাই কর্মী, গ্রুপ ডি স্টাফ ও নিরাপত্তা রক্ষী মিলিয়ে রয়েছে মোট ১৪৯ জন অস্থায়ী কর্মী। এরা প্রত্যেকেই একটি বেসরকারি সংস্থার অন্তর্ভুক্ত। আন্দোলন কারীদের অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতি থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এই সাফাই কর্মীরাই নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে হাসপাতাল সাফাইয়ের কাজ করেছেন। অথচ, নতুন এজেন্সি দায়িত্বে আসার পরই চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সমস্ত সাফাই কর্মীদের বেতন কাটছাঁট করা হয়েছে। প্রত্যেক সাফাই কর্মীর বেতন থেকে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা কোন কারণ ছাড়াই কেটে নেওয়া হচ্ছে। একাধিকবার এজেন্সিকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। যার দরুন মঙ্গলবার বিক্ষোভের পথে হাঁটলেন সাফাই কর্মীরা।
এদিন সকাল থেকে হাসপাতালে কর্মবিরতিতে যান অস্থায়ী সাফাই কর্মীরা। তারপর হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। মূলত কি কারণে তাদের পরিশ্রমের টাকা কাটা হল সেই প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভে শামিল হন শতাধিক সাফাই কর্মী। এদিকে সাফাই কর্মীদের কর্মবিরতির জেরে অচলাঅবস্থা দেখা যায় চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। হাসপাতালের মহিলা পুরুষ ওয়ার্ড সহ একাধিক ওয়ার্ডে নোংরা আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটে থাকে। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে রোগী সহ রোগীর পরিবারের লোকেরা।
এদিকে হাসপাতালে সাফাই কর্মীদের বিক্ষোভের কথা শুনে ছুটে আসেন হাসপাতাল সুপার। তিনি আশ্বস্ত করলেও সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কাজ শুরু করতে নারাজ সাফাই কর্মীরা। তাকে ঘিরেই চলতে থাকে বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারী নীরা মন্ডল জানান, “একেই তো আমাদের স্বল্প বেতনে কাজ করতে হয়। সংস্থার অধীনে চুক্তিভিত্তিক কাজ করি। তারপর যদি এইভাবে বেতন কেটে নেয় তো আমরা কি করব। সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে এই বিষয়ে একাধিকবার কথা হয়েছে। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। তাই আজ আমরা বিক্ষোভ করছি। সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।”
চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার মহম্মদ শামিম বলেন, “এটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিষয় না। তবে সাফাই কর্মীরা যেটা অভিযোগ করছে তা সঠিক। তাদের বেতনে কাটছাট করা হয়েছে। তবে বিষয়টা আমি নিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলব। স্বাস্থ্য ভবনকেও জানিয়েছি। তাঁদের অনুরোধ করব যাতে তাঁরা কাজে ফিরে আসেন।”