শিলিগুড়ি: নিউ জলপাইগুড়ির ঠাকুরনগর রেলগেটে(Thakurnagar Rail Gate) যানজটে আটকে সাধারণ মানুষের রোজই ভোগান্তি। এবারে জনপ্রতিনিধিরাও দুঃসহ সেই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেন। সোমবার জলপাইগুড়ির সাংসদ(MP) ডাঃ জয়ন্ত রায় এই রেলগেটের যানজটে প্রায় আধঘণ্টা ধরে আটকে পড়েন। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়ও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। শেষমেশ দুজনকে ওই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে ডিআরএমের নির্দেশে এডিআরএম মালগাড়ির সিগন্যাল ১৫ মিনিটের জন্য বাতিল করেন। সাংসদ এলাকা ছাড়লে নতুন করে সিগন্যাল দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। জয়ন্ত ও শিখা এদিন ঠাকুরনগর রেলগেটের পাশাপাশি এনজেপি জংশনও পরিদর্শন করেন।
জয়ন্ত বলেন, ‘২০২৫ সালের মধ্যে এনজেপি জংশন ও সংলগ্ন এলাকার চেহারা বদলে যাবে। এ বছরের জুলাই মাসের মধ্যেই এই কাজের প্রথম ধাপ শেষ হয়ে যাবে। কিছু মানুষ উন্নয়নের বিরোধিতা করে রাজনীতি করলেও আমাদের এই কাজের সুবাদে সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি বহু কর্মসংস্থান হবে।’
ট্রেন চলাচলের জেরে গোটা দিনই খানিক সময় অন্তর ঠাকুরনগর রেলগেট বন্ধ থাকে। সেই সময় দু’পাশে আটকে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি অ্যাম্বুল্যান্স, পুলিশ সহ জরুরি পরিষেবার গাড়িগুলিকেও সমান সমস্যায় পড়তে হয়। সমস্যা মেটাতে এলাকায় একটি উড়ালপুল তৈরির জন্য ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক ইতিমধ্যেই রেলকে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ডিআরএমকে নিয়ে সাংসদ এদিন এলাকায় এসেছিলেন। সবাই মিলে এনজেপি জংশনের বিভিন্ন কাজ খতিয়ে দেখেন। পরে ঠাকুরনগর রেলগেট এলাকা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়। সেইমতোই সাংসদ ও বিধায়ক গাড়িতে করে ভিআইপি রোড ধরে ঠাকুরনগরের দিকে যান। কিন্তু ইস্টার্ন বাইপাসে উঠে কিছুটা এগোতেই সাংসদের গাড়ির চাকা থমকে যায়। রেলগেট বন্ধ থাকায় সেই সময় এলাকায় যানজট চলছিল। ডিআরএম, এডিআরএম সহ রেলের আধিকারিকরা রেলগেটেই আটকে ছিলেন। সাংসদ যানজটে আটকে পড়েছেন জেনে তড়িঘড়ি এনজেপিতে ফোন করে মালগাড়ির সিগন্যাল বাতিল করা হয়। এরপর রেলগেট খুলে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় আরপিএফ মোতায়েন করা হয়েছিল। যানজটে আটকে থাকা সমস্ত গাড়িকে দ্রুত এলাকা ছাড়ার সুযোগ করে দিয়ে সাংসদের গাড়িকে রেলগেট পর্যন্ত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। সাংসদ ও রেলের আধিকারিকরা সেখানে প্রায় ১০ মিনিট ধরে কথাবার্তা বলেন। সেই সময়টা রেলগেট খোলাই ছিল। পরে সিগন্যাল দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
রেলগেট বন্ধ থাকায় যানজটে মানুষের কী সমস্যা হয় তা সাংসদ এদিন পরিষ্কার উপলব্ধি করেছেন। এলাকার একটি রিপোর্ট নিয়ে তিনি রেললমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন। সমস্যা মিটবে বলে বিধায়কও আশাবাদী, ‘সাংসদ ও ডিআরএম নিজেরা সমস্যা প্রত্যক্ষ করলেন। আশা করছি, এবারে এলাকায় উড়ালপুল তৈরি হবে।’