আলিপুরদুয়ার: শীত পড়েছে। আবহাওয়ার (Weather) খামখেয়ালিপনার জেরে সকালে ও রাতে শীতের আমেজে মজে থাকছেন আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দারা। আবার বেলার দিকে চড়া রোদে সেভাবে শীতবোধ হচ্ছে না। স্থানীয়রাই বলছেন, অন্যান্য বছর পৌষ মাসে শীত জাঁকিয়ে পড়ে। তবে এবছর সেই ছবি গায়েব। আর এধরনের আবহাওয়ার একটা বড় প্রভাব পড়েছে জেলাবাসীর স্বাস্থ্যে। প্রায় বাড়িতেই বাসা বেঁধেছে সর্দি-কাশি (Cold and cough)। আট থেকে আশি, সবারই একই সমস্যা। আর এই সমস্যা নিয়ে অনেককেই ছুটতে হচ্ছে চিকিৎসকদের কাছে।
জেলা হাসপাতালে প্রতিদিনই প্রচুর রোগী (patient) আসছে। বিশেষ করে সাধারণ ও শিশু বিভাগে এধরনের রোগীদের সব থেকে বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে। সাধারণ অবস্থায় শিশু বিভাগে সাধারণত দিনে ৬০-৭০ জন রোগী আসে। তবে বর্তমানে গড়ে ১২০-১৩০ জন শিশুকে নিয়ে আসছেন অভিভাবকরা। তাদের সকলের এই সর্দি-কাশির সমস্যা। আবার সাধারণ বিভাগে ১২০-১৪০ জন সর্দি-কাশির (Cold and cough) রোগী চিকিৎসক দেখাতে আসেন দৈনিক। বর্তমানে সেই সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ২০০-২২০ জনে।
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের যেমন রোগীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে একই রকম ভিড় চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারেও। তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। চিকিৎসকরা বলছেন, হাসপাতালের রোগীর ভিড় থাকলেও আউটডোরে যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে তাতেই সমস্যা মিটে যাচ্ছে। খুব কম সংখ্যক রোগীকেই ভর্তি করতে হচ্ছে। তবে হাঁপানি রোগী হলে জটিলতা বাড়ছে।
এবিষয়ে জেলা হাসপাতালের সিনিয়ার ফিজিশিয়ান (Senior Physician) সজল ভট্টাচার্যর কথায়, ‘পুরোপুরি শীত পড়ে গেলে এই সর্দি ও কাশির (Cold and cough) এত সমস্যা হত না। আবহাওয়ার এই ঘনঘন পরিবর্তনের জন্য সমস্যা বেশি হচ্ছে। তবে সাবধান থাকলে এই সমস্যাগুলো অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।’ তাঁর পরামর্শ, শীতে বের হলে পর্যাপ্ত গরম জামা ব্যবহার করা দরকার। কখন একটু গরম, আর কখন বেশি শীত, তা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে যাঁরা বাইকে বেশি যাতায়াত করেন, তাঁদের আরও বেশি সাবধান থাকা উচিত।
জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, যে রোগীরা হাসপাতালে আসছে তাদের বেশিরভাগেরই সমস্যা সর্দি ও কাশি (Cold and cough)। কয়েকজনের আবার জ্বরও (fever) রয়েছে। এদিন যেমন জেলা হাসপাতালে বাচ্চাকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন মরিচবাড়ির মৌমিতা রায়। বললেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে বাচ্চার সর্দি। কয়েকদিন আগে ডাক্তার দেখিয়ে গিয়েছি। তবে সর্দি না কমায় আবার নিয়ে এসেছি।’ লাইনে দাঁড়ানো অনেকেই জানালেন তাঁদের বাচ্চাদেরও একই সমস্যা।
অন্যদিকে, সাধারণ আউটডোরের বাইরে দেখা গেল লম্বা লাইন। চেম্বার থেকে বের হয়ে সেই লাইন বারান্দা ছাড়িয়ে গিয়েছিল সোমবার। সেখানেও শোনা গেল জ্বর-সর্দির কথাই। ডাক্তার দেখিয়ে বের হয়ে আসা আলিপুরদুয়ার হাটখোলার বাসিন্দা রবি বর্মন যেমন জানালেন, বেশ কয়েকদিন ধরে কাশির সমস্যায় ভুগছেন। আগেও ডাক্তার দেখিয়েছেন।
রবির মতো অনেকেরই একই সমস্যা। কেউ আগে ডাক্তার দেখিয়ে গিয়েছেন, কেউ বা এদিনই প্রথম দেখাতে এসেছেন। লম্বা লাইনে দাঁড়ানো রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই উঠে এসেছে এদিন।