অনীক চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: বাঙালির প্রিয় পৌষ-পার্বণ দরজায় কড়া নাড়ছে। এখন থেকেই শহর-গ্রামজুড়ে বাড়িতে বাড়িতে পিঠেপুলি তৈরির প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। বাদ নেই মিষ্টির দোকানও। আর এই পিঠেপুলি তৈরির মূল উপকরণ আতপ চালের গুড়োর চাহিদাও তুঙ্গে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে র্যাশনের আতপ চালের উপর নজর দিয়েছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। র্যাশনের আতপ চাল কিনে তা দিয়ে চালের গুঁড়ো তৈরি করে সেটি চড়া দামে বিক্রিও করছে তারা। গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, ওই ব্যবসায়ীরা এখন গ্রামেগঞ্জে বাড়ি বাড়ি ঘুরে অল্প দামে র্যাশনের আতপ চাল কিনে নিচ্ছে।
শুক্রবার জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাতকাটা কলোনি এলাকায় এই আতপ চাল কেনার ছবি দেখা গেল। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টোটো নিয়ে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে দামদর করে অল্প দামে র্যাশনের আতপ চাল কিনছেন। তাঁর নাম কী? কোথা থেকে এই র্যাশনের চাল কিনলেন? জিজ্ঞেস করতেই দ্রুতগতিতে টোটো নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা অপর্ণা মিত্র বলেন, ‘র্যাশনের যে আতপ চাল দেয় তা খাওয়া যায় না। তাই বিক্রি করে ওই টাকা দিয়ে সেদ্ধ চাল কিনি। তাঁর নাম জানি না। মুখ মাংকি ক্যাপে ঢাকা থাকায় চেনার উপায়ও নেই। তবে উনি জানান, বাইরে চাল বিক্রি করার প্রয়োজন নেই, আমাকে দিন। তাই অনেকেই ওঁর কাছে চাল বিক্রি করলাম।’
অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে চাল বিক্রির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সন্তোষ যোশি নামে আরেক স্থানীয় বাসিন্দার স্পষ্ট উত্তর, ‘এই চাল নিয়ে তাঁরা গুঁড়ো করেন নাকি হাঁড়িয়া বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে দেন, তা জেনে আমার কী?’
উপভোক্তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলিয়েই র্যাশনের দেওয়া হয়। তবে সেই র্যাশন নিয়ে তাঁরা কী করছেন সেটা দেখার দায়িত্ব কার? এই প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। অন্যদিকে, বিনামূল্যে মেলা র্যাশনের চাল মানুষ খেতে পারছেন না, এই দাবি অনেকেরই।এই বিষয়ে মহকুমা খাদ্য নিয়ামক শুভাশিস বায়েন বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সম্পূর্ণ বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’